মোবাইলফোন, তুমি কোথা থেকে এলে?

মোহাম্মদ ইউছুপ, চট্রগ্রাম:

লেখক: একজন মোবাইল-আসক্ত নাগরিক

এক সময় মানুষের সবচেয়ে প্রিয় সঙ্গী ছিল বই। তারপর এল রেডিও, টিভি, ক্যাসেট। কিন্তু এখন? এখন মানুষের সবচেয়ে প্রিয় সঙ্গী একটুখানি জিনিস— মোবাইলফোন। ছোট, চৌকস, সর্বজান্তা এবং অবশ্যই— সবচেয়ে বেশি “ঘাড় ধাক্কা” দেওয়া বস্তু।

একটা সময় ছিল যখন বাসায় অতিথি এলে মা বলতেন, “বাবা, চা বানাও।” এখন বলেন, “বাবা, WiFi-এর পাসওয়ার্ড দাও।” অথচ আমি নিজেই জানি না সেই পাসওয়ার্ড, কারণ সেটা আমি দিয়েছি একবার, আর সেই থেকে সে আমাকেই লুকিয়ে বসে থাকে।

📱 মোবাইলের জয়যাত্রা
যখন প্রথম মোবাইলফোন এল, তাতে শুধু কল দেওয়া যেত। তখনও তা ছিল “প্রেমিকদের গোপন অস্ত্র”। এখন সেটা হয়ে গেছে, প্রেমিকের প্রাক্তনের ইনস্টাগ্রাম স্টোরি দেখার লুকানো যন্ত্র!

পুরনো দিনে SMS দিয়ে প্রেম চলত। এখন হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, TikTok, Reels, Shorts— এত কিছু আছে, প্রেম করার সময় কোথায়?

👨‍👩‍👧‍👦 পরিবার বনাম ফোন
খাবার টেবিলে আগে কথা হতো— “আজকের বাজার কত লাগল?” এখন হয়— “মা, তোমার ফোনটা একটু দাও, PUBG আপডেট দিচ্ছে।”

আমার ছোট ভাই একদিন বলল, “ভাইয়া, তোমার মোবাইলে গেম নেই?” আমি বললাম, “না।” সে আমার দিকে তাকিয়ে এমনভাবে তাকাল যেন আমি কোনো গুহায় বাস করা মানুষ!

📸 ফেসবুকিয়া জীবন
আজকাল মানুষ জীবনের চেয়ে “লাইফস্টাইল” নিয়ে বেশি ব্যস্ত। বিয়ের দাওয়াত খেতে গিয়ে আগে ছবি তোলে, তারপর বলে, “ভাই, একটু রাইস দাও।” কনেপক্ষ-বরপক্ষ দু’পক্ষই মনে করে— ছবি ছাড়া খাওয়া মানে উপোস থেকে ফিরে যাওয়া।

আমি একবার গেছি এক বন্ধুর জন্মদিনে। সে বলল, “আগে ভিডিও কর, তারপর কেক খাও।” আমি বললাম, “খেলেই তো হবে না?” সে বলল, “না ভাই, খাওয়ার প্রমাণ চাই!”

🛌 ঘুমের সময়েও ফোন
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিছানায় না শুয়ে যদি একবার ফেসবুক না চেক করি, আমার মনে হয় আমি দেশের সংবাদ সচেতন নাগরিক না! অথচ সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি— মোবাইলটা বুকের ওপর পড়ে আছে, আর চোখের নিচে কালি!

একবার ঘুম থেকে উঠে মোবাইল খুঁজছি। আধাঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর আবিষ্কার করলাম, মোবাইলটা আমার হাতেই ছিল। আর সেই সময়ের মধ্যে আমি দুইবার আমার মাথার চুল ছিঁড়েছি!

📞 আত্মীয়-স্বজনের ফোন
মোবাইল যেমন আনন্দ দেয়, তেমনি আতঙ্কও দেয়। বিশেষ করে যখন হঠাৎ কোনো আত্মীয়ের কল আসে দুপুর ৩টায়। আপনি তখন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। কল রিসিভ করতেই প্রশ্ন আসে— “ঘুমাচ্ছো?” আপনি তখন উত্তর না দিয়ে ভাবেন, “না, আমি মঙ্গলগ্রহে হাঁটছি!”

আর ফেইসবুকে ছবি দিলেই শুরু হয় মন্তব্য যুদ্ধ:

“এই জামাটার দাম কত?”

“কে ছবি তুলল?”

“এই ছেলেটা কে?”

মনে হয় FBI না হয়ে আত্মীয়রা হয়ে গেছেন FAI— Facebook Analysis Intelligence!

📵 মোবাইল ছাড়া জীবন?
একদিন মোবাইলটা সার্ভিসিংয়ে দিলাম। চার ঘণ্টা কোনো ফোন ছিল না। মনে হচ্ছিল আমি পৃথিবীর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক হারিয়ে ফেলেছি। রাস্তার কাকও যেন আমার দিকে অবজ্ঞার চোখে তাকাচ্ছিল।

বন্ধুরা বলল, “তোর চোখে পানি কেন?” আমি বললাম, “ওটা WiFi-এর অভাবের অশ্রু!”

🤳 শেষ কথা
মোবাইল খারাপ না, কিন্তু মোবাইলের উপরে আসক্তি খারাপ। একসময় আমরা মানুষকে সময় দিতাম, এখন মোবাইলকে দিই। আগে হ্যান্ডশেক ছিল, এখন হ্যান্ড-সেট!

তাই মাঝেমাঝে মোবাইলটাকে অফ করে নিজেকে অন করাই ভালো। জীবনটা হোক রিয়েল, স্ক্রিন নয়— সিন!

৭৭তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আইএইচআরসিজি’র অনুষ্ঠানে-প্রফেসর নসরুল কদির মানবাধিকার রক্ষায় দেশী-বিদেশী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গণমূখী কর্মকাণ্ড বাড়াতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এস.এম. নসরুল কদির বলেছেন-বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করেছে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এখনও পর্যন্ত মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষায় সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে সরকার আসুক না কেন, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দিকে অধিক মনোযোগী হতে হবে। এবং এ কাজে মানববাধিকার সংগঠনগুলোকে মানবাধিকার রক্ষায় দেশী-বিদেশী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গণমূখী কর্মকাণ্ড বাড়াতে হবে। তিনি আজ সকাল ১০ ঘটিকায় ৭৭তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আইএইচআরসিজি বাংলাদেশ’র উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইএইচআরসিজি বাংলাদেশ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: আমির হোসেন খাঁন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে আইএইচআরসিজি বাংলাদেশ’র জেনারেল সেক্রেটারী সৈয়দ মোস্তফা আলম বলেন, মানবাধিকার সংগঠনের নামে বাংলাদেশের কোন জায়গায় চাঁদাবাজী দখলবাজী, মামলা বাজী করে জনগণকে হয়রানী করা যাবে না। যারা এ কাজে জড়িত থাকবেন তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। এবং আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনমুখী এবং স্বাধীনতা রক্ষায় যে দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে তাদেরকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আইএইচআরসিজি’র নির্বাহী পরিচালক নুরুল আবসার তৌহিদ বলেন, মানবাধিকার সংগঠনকে বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য সকল জেলায় সৎ ও যোগ্য মানুষকে সংগঠনের নেতৃত্বে আসার আহ্বান জানান। আইএইচআরসিজি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব খান সম্রাট, নেত্রী নাহিদা আক্তার নাজু ও চম্পা রানী নন্দীর যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দীন আহমদ, সংঠনের নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদিকা তাহেরা শারমীন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবু তৈয়ব, সংগঠনের বিভাগীয় নেতা মোঃ আব্দুর রহিম, পটিয়া উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নারী নেত্রী আফরোজা বেগম জলি, অপকার নির্বাহী পরিচালক মোঃ আলমগীর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুচ তালুকদার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ওহাব, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ডা. জামাল উদ্দিন, আর্ন্তাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন, সীতাকুন্ড উপজেলার সভাপতি মোঃ মুসলিম উদ্দিন ভূইয়া, মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাবেদ চৌধুরী, সংগঠনের নারী নেত্রী জান্নাতুল মাওয়া মারুফা, শারমীন সরকার, জোহরা সেলিম, সীতাকুন্ড পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাসুদা বেগম, নারী উদ্যোক্তা মনিরা দিলশাদ তানসি, সংগঠনের নেতা যথাক্রমে-হাজী নুরুল ইসলাম, তাহেরা মহরম, ফাহমিনা আলম, ইঞ্জি: কাজী মিজান, এনাম হোসেন, মোঃ আলাউদ্দিন, আব্দুল কাদের চৌধুরী, মোঃ ইয়াছিন, মোঃ রাজু চৌধুরী, তৌহিদুল আলম তালুদার, মোঃ ইকরাম, ইব্রাহিম লালন, সঙ্গীত শিল্পী এস.বি সুমি, মোঃ ইমাম উদ্দিন, মোঃ আজহারুল ইসলাম তামিম, শান্ত দে, ফয়জুল হক, আসিফ রোহান, মোঃ ইয়াছিন প্রিন্স, তাহমিনা আক্তার প্রমুখ। ৭৭তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে কেক কেটে এবং অনুষ্ঠান শেষে বিগত কর্মকাণ্ডের উপর সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।