আজ সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী

আজ ৬ সেপ্টেম্বর। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর দিন। ১৯৯৬ সালের এই দিনেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অসাধারণ জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ। তার হঠাৎ মৃত্যুর খবর যেন পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। আজ তার ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। সময় যতই এগিয়ে যাক না কেন, এই দিনে কোটি ভক্তের মনে আবার জেগে ওঠে শোক, বিস্ময় আর গভীর ভালোবাসা।

সালমান শাহ, যার প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন, জন্মেছিলেন ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, সিলেটে। তিনি মাত্র চার বছর সময়ের মধ্যে (১৯৯৩-১৯৯৬) ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এক অনন্য ইতিহাস গড়েছিলেন। বাংলা সিনেমায় এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল তার হাত ধরেই।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেনমোহর’, ‘প্রিয়জন’সহ একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসায় সালমান শাহকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মৃত্যুকে প্রথমে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করা হলেও, শুরু থেকেই এ মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয় নানা প্রশ্ন ও রহস্য। এখন পর্যন্ত তা নিয়ে নানা বিতর্ক, তদন্ত ও আইনি লড়াই চলেছে। কিন্তু তার প্রকৃত মৃত্যুর কারণ আজও পরিষ্কার নয়।

সালমান শাহের মৃত্যুতে শুধু চলচ্চিত্র জগত নয়, পুরো বাংলাদেশ যেন হারিয়ে ফেলেছিল তার এক প্রিয় মুখ, এক আশার প্রতীক। তার অকাল চলে যাওয়া দেশের চলচ্চিত্রের অগ্রযাত্রায় এক বিরাট শূন্যতা তৈরি করে, যা আজও পূরণ হয়নি।

যে কয়জন নায়ক মৃত্যু পরেও এতটা জনপ্রিয় থাকেন, সালমান শাহ তাদেরই একজন। আজও ইউটিউবে তার সিনেমা মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ দেখে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তার নামে চলে ট্রেন্ডিং, হাজারো তরুণ এখনো তার স্টাইলকে অনুসরণ করে। তিনি শুধু একজন অভিনেতা নন, এক কালজয়ী সংস্কৃতি-প্রতীক।

আজ এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই সালমান শাহকে। তার জীবনের ছোট্ট পরিসর আমাদের চোখে দেখিয়েছে বড় স্বপ্ন, বড় প্রেম, বড় আশা। তিনি নেই, কিন্তু তার কাজ এবং ক্যারিশমা আজও আমাদের মনে জ্বলজ্বলে।

সালাম, সালমান শাহ। বাংলা চলচ্চিত্র আপনাকে কখনো ভুলবে না। আপনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন কোটি হৃদয়ের নায়ক হয়ে।