লেবাননের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণ আলোচনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। যদিও আলোচনায় বসতে শর্ত দিয়েছে গোষ্ঠীটি। বুধবার (৯ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।
হিজবুল্লাহর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েল যদি দক্ষিণ লেবানন থেকে তাদের সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে এবং তাদের হামলা বন্ধ করে তবে দলটি লেবাননের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাদের অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
মার্কিন-সমর্থিত দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের সময় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে একটি রাষ্ট্রীয় একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শীঘ্রই হিজবুল্লাহ’র অস্ত্রাগার নিয়ে গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চান তিনি। লেবাননের তিনটি রাজনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে গত বছরের যুদ্ধ এবং হিজবুল্লাহর সিরিয়ার মিত্র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে নিরস্ত্রীকরণের আলোচনা তীব্র হয়েছে।
২০২৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর পর থেকে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে হিজবুল্লাহ। বিশেষ করে গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা এবং হাজার হাজার যোদ্ধা নিহত হওয়ার পাশাপাশি বেশিরভাগ অস্ত্রাগার ধ্বংস হওয়ার কারণে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে হিজবুল্লাহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের প্রেক্ষাপটে অস্ত্র নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত তারা। তবে এটি দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি পাহাড়ের চূড়া থেকে ইসরাইলের সৈন্য প্রত্যাহার করার ওপর নির্ভর করে।
হিজবুল্লাহর মিডিয়া অফিস তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেয়া মন্তব্যের বিষয়ে কোনো জবাব দেয়নি এবং জবাব দিতে রাজি হয়নি।
এদিকে দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েনকৃত স্থল সৈন্য প্রত্যাহার করলেও ফেব্রুয়ারিতে পাঁচটি পাহাড়ের চূড়ার অবস্থান ছাড়েনি ইসরায়েল। তাই হিজবুল্লাহ বলছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে শেষ পর্যন্ত লেবানন সেনাদের কাছে তাদের অস্ত্র হস্তান্তর করার ইচ্ছা ছিল।
গেল বছরের নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ওয়াশিংটন হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার দাবি করছে। হিজবুল্লাহ আধাসামরিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী যাকে সমর্থন করে আসছে ইরান।
হিজবুল্লাহর চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, এটি ড্রোন এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইলসহ লিটানির উত্তরে সেনাবাহিনীর কাছে তার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হস্তান্তর করছে।