বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন ঢাকাবাসী। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ইশরাক। এবার চলমান এই আন্দোলনের মধ্যেই নতুন বার্তা দিয়েছেন খোকাপুত্র। জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি রাজপথে দাঁড়াবেন তিনি।
বুধবার (২১ মে) বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ইশারক হোসেন লিখেছেন, ‘আন্দোলনকারী জনতার প্রতি সর্বাত্মক সংহতি জানাতে এবং তাদের সঙ্গে যতদিন প্রয়োজন রাজপথে সহ অবস্থান করার জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই হাজির হব ইনশাআল্লাহ’।
এর আগে, দুপুরে আরেক স্ট্যাটাসে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, ‘নির্দেশ একটাই, যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না’।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
পরে গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২৫ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
পরে মামুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে ২৭ মার্চের রায় এবং ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন বেআইনি হবে না এবং ইশরাক হোসেনের শপথ পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এর আদেশের দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
বুধবার (২১ মে) আদেশের জন্য দিন ধার্য থাকলেও ফের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন আদালত।