‘পাকিস্তানি’ বলে কটূক্তির শিকার কে এই আইএএস অফিসার ফৌজিয়া?

ভারতের ডেপুটি কমিশনার (আইএএস অফিসার) ফৌজিয়া তারান্নুম সম্পর্কে “পাকিস্তানি” বলে অবমাননাকর মন্তব্য করেন কর্ণাটকের বিজেপি এমএলসি এন রবিকুমার। এ ঘটনায় মামলা হওয়ায় পুলিশি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে এই নেতাকে। যদিও তার মন্তব্যের পর দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।

বুধবার (২৮ মে) এ নিয়ে এক প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, ২৪ মে অনুষ্ঠিত বিজেপির বিক্ষোভের সময় এন রবিকুমার ফৌজিয়াকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন।

পরে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন এবং মুখ ফসকে এমনটি বলে ফেলেছেন বলে জানান। রবিকুমার আইএএস অফিসারকে কংগ্রেস দলের নির্দেশে কাজ করার অভিযোগ এনেছিলেন এবং বলেছিলেন,‘তিনি মনে হয় পাকিস্তান থেকে এসেছেন।’

এরপরই আইএএস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ফৌজিয়া তারান্নুমের সমর্থনে এগিয়ে আসে। পরে বিজেপি এমএলসির বিরুদ্ধে স্টেশন বাজার থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আইএএস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ওই নেতার “দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অগ্রহণযোগ্য মন্তব্যের” জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করেছে। বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, ‘ফৌজিয়া তারান্নুম একজন অনবদ্য সততার কর্মকর্তা, যার দৃষ্টান্তমূলক ট্র্যাক রেকর্ড এবং জনসেবা এবং রাষ্ট্রের প্রতি গভীর নিষ্ঠা রয়েছে।’

বিজেপি নেতার সমালোচনা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘রবি কুমারের করা মন্তব্য ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক এবং সম্পূর্ণরূপে যুক্তিহীন। এই ধরনের উসকানিমূলক এবং মিথ্যা বক্তব্য কেবল নিবেদিতপ্রাণ সরকারি কর্মচারীদের মর্যাদাকে নষ্ট করে না বরং কর্তব্য পালনে গুরুতর মানসিক আঘাত এবং হয়রানিরও কারণ হয়।’

কর্ণাটাকার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘রবিকুমারের বক্তব্য অসহনীয় এবং এটি এমন কিছু যা ঘৃণা সৃষ্টি করে। তাই, পুলিশ তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে, আমি তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।’

এ বিষয় নিয়ে তেমন কিছু বলেননি ফৌজিয়া তারান্নুম। তিনি বলেন, ‘আমি বরং আমার কাজকে নিজের পক্ষে কথা বলতে দেব।’

ফৌজিয়া তারান্নুমের পরিচয়

ফৌজিয়া তারান্নুম একজন ২০১৫ ব্যাচের ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা (আইএএস) কর্মকর্তা। বর্তমানে কর্ণাটকের কালাবুর্গি জেলার ডেপুটি কমিশনার এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই মুসলিম কর্মকর্তা।

তিনি তার অনুকরণীয় জনসেবার জন্য স্বীকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভোটার তালিকা ব্যবস্থাপনায় তার অসামান্য কাজের জন্য ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সেরা নির্বাচনী অনুশীলন পুরস্কার পেয়েছেন।

২০১১ সালে ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস)-এর জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর, তিনি আইএএস অফিসার হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন এবং ২০১৪ সালে এই লক্ষ্য অর্জন করেন।