ভাইরাল হওয়া বাপ্পারাজের ডায়লগ নিয়ে যা বললেন সেই ‘হেনা’

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা বাপ্পারাজ। ক্যারিয়ারে অসংখ্য রোমান্টিক সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে দর্শকের কাছে অভিনেতা বাপ্পারাজ মানেই ব্যর্থ প্রেম বা ট্র্যাজেডির গল্প! অর্থাৎ ত্রিভুজ প্রেম বা স্যাক্রিফাইসের গল্প নির্ভর সিনেমাগুলোর কারণে আজও এই নায়ক বেশ জনপ্রিয়!

অনেকদিন ধরেই তিনি সিনেমা থেকে দূরে আছেন বাপ্পারাজ। পর্দার আড়ালে থাকলেও বিভিন্ন সময়ই ভাইরাল হন এ অভিনেতা। এইতো গেল বছর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও সেখ বসিরকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েক দিন উপদেষ্টা নিয়ে নানারকম কথা হয়েছে। এক আইনজীবী ফারুকী ও সেখ বসিরকে পদ থেকে সরিয়ে নিজেকে সেই পদে চান- এই মর্মে একটি আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন। এরইমধ্যে রম্যবিষয়ক অনলাইন সাময়িকী ‘ইয়ার্কি’ বেশ কিছু কার্ড প্রকাশ করেছিল। যেখানে মজা করেই উল্লেখ করা হয়েছিল আর কোন কোন বিষয়ক উপদেষ্টা করা যেতে পারে। সেখানেই ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেতা বাপ্পারাজকে ব্যর্থ প্রেমবিষয়ক উপদেষ্টা উল্লেখ করে একটি কার্ড বানানো হয়।

সম্প্রতি নতুন করে ভাইরাল হয়েছেন বাপ্পারাজ। তার অভিনীত সিনেমার বিখ্যাত এক সংলাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বেশ হাস্যরস। হঠাৎ করে সবাই মজেছেন বাপ্পারাজের হেনায়। ‘চাচা হেনা কোথায়’ সংলাপে সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া।

১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার ‘হেনা’র দৃশ্যটি নতুন করে ভাইরাল হয়েছে। সিনেমাটিতে বাপ্পারাজ ও শাবনাজ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমার একপর্যায়ে নায়ক বকুল (বাপ্পারাজ) দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে তার প্রেমিকা হেনার (শাবনাজ) বাড়ি সাজানো দেখতে পান।

তিনি হেনার বাবাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? চাচা, হেনা কোথায়?’ জবাবে চাচা বলেন, ‘হেনাকে তুমি ভুলে যাও, হেনার বিয়ে হয়ে গেছে।’ বকুল তখন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘না না, হেনার বিয়ে হতে পারে না। এ আমি বিশ্বাস করি না।’ এরপর ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে, মনের শিকল ছিঁড়ে, পাখি যায় উড়ে যায়’ গানটি বাজতে থাকে।

দীর্ঘদিন পর এই সংলাপটি সামাজিক মাধ্যমে পুনরায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করছেন এবং নিজেদের মতামত ও অনুভূতি প্রকাশ করছেন। বিভিন্ন পেজ, গ্রুপে বানানো হচ্ছে মিমস। মানুষের কমেন্ট বক্সেও অহরহ দেখা যাচ্ছে এই মিমস। তবে ঠিক কী কারণে এই সংলাপটি হঠাৎ করে ভাইরাল হলো, তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে বাপ্পারাজ-শাবনাজ অভিনীত ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার পুরনো সংলাপ হঠাৎ ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি নজর এড়ায়নি দুই তারকার। দু’জনই যদিও এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। তবে পুরনো কাজ নতুন করে ভাইরাল হওয়ার ব্যাপারে অভিনেত্রী শাবনাজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, এই ভিডিও ক্লিপ নিয়ে বেশ হাসাহাসি করেছেন তারা। ফেসবুক ব্যবহারের সময় এটি নজরে আসার পর তারা একে অপরকে পাঠিয়েছেনও।

শাবনাজ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ও বাপ্পারাজ ভাই দু’জনই মজা পাচ্ছি। ভালো লাগছে এ কারণে যে, মানুষ সিনেমাটির কথা ফের মনে করছে। নায়ক-নায়িকার আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে নিজেরা সংযোগ করতে পারছেন তারা। ওই সময় বেশ প্রশংসিত হয়েছে সিনেমাটি। ফের এখনো প্রশংসিত হচ্ছে। যা একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে বড় পাওয়া।

এ অভিনেত্রী বলেন, সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকরা তা দেখে, তখন হয়তো সেটি হিট হয় বা আলোচিত হয়। তারপর মানুষ তা ভুলে যায়। কেননা, এত বছরে কত সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, কত নতুন নতুন গল্প এসেছে, সবই নতুন―এরইমধ্যে ২৯ বছর আগের ওই সিনেমার কথা সবার ভুলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হয়ে পুরো গল্প নিয়ে, পুরনো সংলাপ নিয়ে ফের চর্চা হচ্ছে। বিষয়টি সত্যিই ভালো লাগছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমা। ওই সময় সিনেমাটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দর্শকমহলে। একইসঙ্গে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও চিত্রনায়িকা শাবনাজ। অন্যান্য চরিত্রে আরও অভিনয় করেছিলেন অমিত হাসান, এটিএম শামসুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন, গাংগুয়া ও দিলদার।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালে ভেতরের বা বাইরের যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় তিনি একথা বলেন। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খবর বাসসের। প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাট না, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ঝঞ্ঝাই আসুক আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়– নির্বাচনকালীন পদায়ন, ট্রেনিং, নিরাপত্তা ইস্যু এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিসইনফরমেশন মনিটরিং। প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের বিষয়ে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় কর্মকর্তাদের দক্ষতা বিবেচনা করে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বদলি ও পদায়নের বিষয়ে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে এমন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানও শুরু করেছে। কর্মকর্তাদের নিজ জেলা ও নিকটবর্তী জেলা এবং আত্মীয় পরিজনের কেউ প্রার্থী হলে সেসব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হবে। আগের তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কর্মকর্তাদের বিরত রাখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব পোস্টিং দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে করে তারা পর্যাপ্ত সময় পায় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য এবং প্রয়োজনীয় ট্রেনিং শুরু করা যায়। শফিকুল আলম জানান, আজকের বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিটিংয়ে এআই, ডিস–ইনফরমেশন, মিস–ইনফরমেশন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বৈঠকের একটা বড় কনসার্ন ছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে সেটা কীভাবে দ্রুত ডিবাঙ্ক করা যাবে তা নিয়ে। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো অপতথ্যকে আইডেন্টিফাই করে সেটা যে অপতথ্য এটা প্রচার করতে গিয়ে অনেক সময় লেগে যায়। সেই সময়ের মধ্যে অনেক ক্ষতিও হয়ে যায়। এজন্য একটি সেন্ট্রাল ডিস–ইনফরমেশন মনিটরিং সেল ও একটি সেন্ট্রাল কমিউকেশন সেল তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শুধু শহর অঞ্চল বা জেলা পর্যায়ে না, গ্রাম পর্যায়েও মানুষের কাছে যেন ফ্যাক্টচেকিং তথ্যগুলো পৌঁছাতে পারে সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা গুরুত্ব দিয়েছেন। অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানারকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই দিয়ে ছবি–ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের সূচনা হওয়া মাত্রই সেটা ঠেকাতে হবে যেন ছড়াতে না পারে। নির্বাচন–কেন্দ্রিক প্রচার–প্রচারণার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, পিএসও লে. জে. কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ডিজি র‌্যাব এ কে এম শহিদুর রহমান, ডিজি কোস্টগার্ড রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হক, ডিজি আনসার মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এবং গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।