২০২৩ সালের জুনে শুরু হয় কাজ। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুনে। এর মধ্যে শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ। বর্তমানে সেই কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, অর্থ সংকটের জন্য কাজ বন্ধ। তাদের দাবি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরই কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
ঘটনাটি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ১০০ শয্যার নতুন হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৩১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়। দরপত্র আহ্বানের পর মেসার্স মাজেদা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অনিক ট্রেডার্স নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২৪ সালের ৩০ জুন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পে অর্থ সংকটের কারনে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩০ শতাংশ কাজের পর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখে।
নতুন হাসপাতাল ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে পুরোনো হাসপাতাল ভবন এবং অন্যান্য অবকাঠামো সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলায় উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ বিপাকে পড়েছেন। চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না তারা। বাধ্য হয়ে জেলায় অথবা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। এতে করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসাদের।
দরপত্র অনুযায়ী, প্রকল্পে পাঁচতলা বিশিষ্ট ১০০ শয্যার নতুন হাসপাতাল ভবন, কনসালটেন্ট ল্যাবরেটরি, লিফট, ইউএইচএফপিও কোয়াটার, স্টাফ ডরমেটরি, অক্সিজেন ভবন, দ্বিতল গ্যারেজ কোয়াটার, বিদ্যুতের জন্য সাবস্টেশন, হাসপাতাল চত্ত্বরে সড়ক ও নানা দৃষ্টিনন্দন কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি শুধুমাত্র হাসপাতালের মূল ভবনের তিনতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, ‘অবকাঠামো নির্মাণ সংকটের কারণে চিকিৎসেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ নতুন হাসপাতাল ভবন নির্মাণের জন্য পুরানো অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে নিয়মিত ভর্তিকৃত রোগী হাসপাতালে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া দুষ্কর। হাসপাতালের বহু পুরাতন একটি কোয়াটারে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।’
এ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩২টি চিকিৎসক পদ থাকলেও মাত্র ছয়জন কর্মরত আছেন। পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের এ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী অন্তত পাঁচ উপজেলার সীমান্তবর্তী মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন।’
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘অর্থ সংকটের কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। অধিদপ্তর থেকে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাকিল সরোয়ার বলেন, ‘অর্থ সংকটে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ হলেই যথারীতি নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’