আলো নিভিয়ে সীমান্তে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা, বিজিবির বাধায় সরে গেল বিএসএফ

ভারতের ত্রিপুরার বিলোনীয়া শহরের জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরাতে সীমান্তের বিতর্কিত নোম্যান্সল্যান্ডে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা চালায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বাধায় শেষ পর্যন্ত সরে যেতে বাধ্য হয় তারা।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাতে, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বল্লামুখা সীমান্ত এলাকায়। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ ওই সময় সীমান্তের বৈদ্যুতিক আলো বন্ধ করে গোপনে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা চালায়।

ফেনী-৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, “বিএসএফ বৃষ্টির পানি অপসারণের জন্য ড্রেন নির্মাণ করছিল। কিন্তু তাদের কাজের কিছু অংশ নোম্যান্সল্যান্ডের ২০ গজের মধ্যে ঢুকে পড়ে, যা দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী অনুমোদন ছাড়া অবৈধ। তাই আমরা বাধা দিয়েছি।”

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বিলোনীয়া শহরে টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শহর ও পুলিশ স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পানি জমে রয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে, বাংলাদেশের ভাটির দিকে পানি সরাতে পারলে তাদের জলাবদ্ধতা কাটবে। তাই তারা নোম্যান্সল্যান্ডে ড্রেন তৈরি করতে চেয়েছিল।

ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন সতর্ক আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “সীমান্তে লাইট বন্ধ করে বিএসএফ’র এমন কার্যক্রম সন্দেহজনক। বল্লামুখা বাঁধের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাতে তারা কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জলাবদ্ধতা সমাধানের কথা বুঝি, তবে তা বাংলাদেশের স্বার্থের ক্ষতি করে নয়।”

স্থানীয় প্রশাসন, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং সচেতন মহল একযোগে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের ভূখণ্ড বা স্বার্থে যেন কোনো ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।