Search
Close this search box.

আসছে সর্বজনীন পেনশনের ইসলামিক সংস্করণ

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও বাস্তবমুখী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জনগণের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে ইসলামিক মূল্যবোধভিত্তিক বিকল্প পেনশন স্কিম চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই, এককালীন অর্থ উত্তোলনের সুযোগ, চাঁদার হার ও সীমার পরিবর্তন এবং নতুন শ্রেণির কর্মীদের অন্তর্ভুক্তি।

গতকাল বুধবার (১৪ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় এই সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ও পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি নির্ধারিত পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর তাঁর জমাকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ এককালীন উত্তোলন করতে পারবেন। পূর্বে এই ধরনের কোনো সুযোগ ছিল না।

প্রবাসী ও প্রগতি স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ন্যূনতম চাঁদার হার ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটি প্রবাসী ও স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য বড় ধরনের স্বস্তির বিষয়।

অন্যদিকে, উচ্চ আয়ের অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রগতি স্কিমে চাঁদার সর্বোচ্চ সীমা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

আউটসোর্সিং কর্মীদের অন্তর্ভুক্তি:
প্রগতি স্কিমের আওতায় এবার থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত সেবাকর্মীরাও অংশ নিতে পারবেন। এতে করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের আরও বহু কর্মী জাতীয় পেনশন কাঠামোর সামাজিক সুরক্ষা সুবিধার আওতায় আসবেন।
ইসলামিক পেনশন স্কিমের সম্ভাব্যতা যাচাই:

ধর্মীয় মূল্যবোধ অনুসারে পেনশন ব্যবস্থার একটি ইসলামিক সংস্করণ চালুর প্রস্তাব সভায় আলোচনায় আসে। পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে আগামী সভায় প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
আন্তর্জাতিক সদস্যপদ অর্জনের উদ্যোগ:

জাতীয় পেনশন ব্যবস্থার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশনের (ISSA) সদস্যপদ অর্জনের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে।
জনসচেতনতায় জোর প্রচার অভিযান:
সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে আরও জনপ্রিয় ও ব্যাপকভাবে পরিচিত করতে ফেসবুক, ইউটিউব, জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলার সময় প্রচার চালানোর পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।
সরকার আশা করছে, এসব উদ্যোগ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে একটি আরও সহনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই কাঠামোয় রূপান্তর করবে, যা দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।