বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি লন্ডন সফরে দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঈদে নতুন নোট ইস্যু এবং রেমিট্যান্স প্রবাহসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন নোট ইস্যু
গভর্নর জানান, বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নতুন নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত সরকারের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে। আগের সরকারের অতিরিক্ত ছাপানো নোটগুলোর অবশিষ্ট অংশ বাজারে ছাড়া হচ্ছে না এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। নতুন নোট ছাপানোর কাজ চলছে, যা একটি ব্রিটিশ ও একটি সুইস কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে। এপ্রিলের শেষ নাগাদ নতুন নোট বাজারে আসতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহ
রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে গভর্নর বলেন, ২০২০ সালের জুলাই মাসে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আড়াই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। চলতি মাসের মাত্র ১৯ দিনেই সোয়া ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং এই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার পেছনে প্রণোদনা বা অর্থপাচার বন্ধ হওয়াকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ বছর মোট রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অর্থপাচার ও এস আলম গ্রুপ
লন্ডন সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ, বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের অর্থ ফেরত আনার জন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, এস আলম ও তার পরিবার প্রায় ১৫-২০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। এই অর্থ পাচারের উৎস এবং বিদেশে তাদের সম্পদ চিহ্নিত করার কাজ চলছে। ব্রিটিশ সরকার, এনজিও এবং আইনজীবী সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় এই অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রিজার্ভ পরিস্থিতি
গভর্নর আরও উল্লেখ করেন, অর্থপাচার বন্ধ হওয়ায় রিজার্ভের ক্ষয় অনেকটাই কমে এসেছে। আইএমএফের বিপিএম-সিক্স অনুযায়ী, ২০ মার্চ পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।
এই সাক্ষাৎকারে গভর্নর অর্থনৈতিক বিভিন্ন দিক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর ইতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরেন।