ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে চরম অবনতি ঘটেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের। ঘটনার পর থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদেশ। তার ওপর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে কয়েক দফায় কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং ওয়াকফ আইনবিরোধী আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া দাঙ্গার পেছনে সীমান্তের দুষ্কৃতকারীদের সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। সেই দাঙ্গায় অন্তত তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ওই সহিংসতা উসকে দিতে বাংলাদেশি উপদ্রবকারীরা জড়িত ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তজুড়ে টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত ব্যবহার করে অনুপ্রবেশ কিংবা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হতে পারে।
এদিকে পেহেলগামে হামলার জেরে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া নিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছে ইসলামাবাদও। এরইমধ্যে সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে পাকিস্তান। পাশাপাশি দেশটির নৌবাহিনীকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাগুলির ঘটনাও বেড়েছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গত মঙ্গলবার দাবি করেন, ভারতের পক্ষ থেকে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সীমিত আকারে সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে—এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ পেয়েছে তারা।
তার আগের দিনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে তাদেরকে অভিযান চালানোর পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এ অবস্থায় উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলেও পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছে নয়াদিল্লি। নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর পাশপাশি আধাসামরিক বাহিনীর তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।