চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়ার বিস্তার | চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী।
চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জ্বর নিয়ে যত রোগী আসছেন, গড়ে তাদের ৭৬ শতাংশ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। কোনো কোনো স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে এই হার ৮৯ শতাংশ। রোগীদের রক্তের পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর নিয়ে আসা বেশির ভাগ রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হচ্ছে। এবারের মতো এত চিকুনগুনিয়া রোগী আগে কখনও দেখা যায়নি। শিশু থেকে বয়স্ক– কেউ বাদ নেই। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কিন্তু বড় পরিসরে চিকুনগুনিয়ার বিস্তার ঘটলেও সরকারের স্বাস্থ্য প্রশাসন থেকে কোনো বাড়তি উদ্যোগ নেই।
মশাবাহিত চিকুনগুনিয়ায় অবর্ণনীয় শারীরিক কষ্ট ভোগ করতে হয় রোগীকে। তবে এতে মৃত্যুর ঘটনা নেই বললেই চলে। এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি প্রতি ১০ হাজারে একজন।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি বন্দরনগরীতে মশা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছিল রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামে মশার ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত ঝুঁকিপূর্ণ সীমার কয়েক গুণ।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সোমবার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেছেন, মশার ঘনত্ব অনেক বেশি। যে কারণে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মশা মারার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বিষয়টি আমরা তাদের জানিয়েছি। উপজেলা পর্যায়েও রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি সমকালকে বলেন, ‘ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা ১০০ দিনের বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি নিয়েছি। ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা জরুরি। নগর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্বও সবার।’
কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, জমে থাকা স্বচ্ছ পানি এডিস মশার প্রজননের উপযুক্ত ক্ষেত্র। ডাবের খোসা, প্লাস্টিক বোতল কিংবা পলিথিনে এক মিলিলিটার পানি জমে থাকলেও তা থেকে মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ঠেকানোর কোনো ওষুধ বা টিকা নেই। উপসর্গের মোকাবিলা করাই প্রধান চিকিৎসা। ১১৯ দেশের প্রায় ৫৬০ কোটি মানুষ বর্তমানে মশাবাহিত এ রোগের বিপদে আছে।
রক্ত পরীক্ষা করলেই চিকুনগুনিয়া!
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এবং আন্দরকিল্লার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল নগরের সবচেয়ে বড় সরকারি চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র। কিন্তু তাদের চিকুনগুনিয়া শনাক্তের ব্যবস্থা নেই। জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের রক্ত পরীক্ষার জন্য অন্য হাসপাতালে
পাঠান চিকিৎসকরা। তবে তারা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি করেন।
চমেক হাসপাতালের তথ্য বলছে, গতকাল সেখানে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে হাসপাতালের নিচতলার ফিভার ক্লিনিকে ভর্তি ছিলেন ২২ জন; জেনারেল হাসপাতালে ছিলেন ১২ জন।
জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ থেকে গত এক সপ্তাহে চিকুনগুনিয়া সন্দেহে অন্তত আড়াইশ রোগীকে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তারা বাইরে পরীক্ষা করিয়ে আবার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের কাছে রিপোর্ট নিয়ে যান। এই রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৮৩ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়ার অস্তিত্ব মিলেছে। শনাক্তের হার প্রায় ৭৪ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে বেসরকারি এপিক হেলথকেয়ার সেন্টার। এখানে গত দুই সপ্তাহে ৩৫৬ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩১৬ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। শনাক্তের হার প্রায় ৮৯ শতাংশ।
এপিক হেলথকেয়ারের হেড অব মেডিকেল সার্ভিস হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, ‘অল্প সময়েই চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন জ্বরে আক্রান্ত অনেককে পরীক্ষা করে অর্ধেকের বেশি চিকুনগুনিয়া পজিটিভ আসছে। কখনও কখনও ১০০ জনের পরীক্ষায় ৭০ থেকে ৮০ জন চিকুনগুনিয়া রোগী পাওয়া যাচ্ছে।’
নগরের পাঁচলাইশ মোড়ের পার্কভিউ হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত ২৬৩ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ১৪২ জনের শরীরে
চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২২ জুলাই ৪১ রোগীর মধ্যে ৩০ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন, যা মোট রোগীর প্রায় ৭৪ শতাংশ।
পার্কভিউ হাসপাতালের এক সপ্তাহের রক্ত পরীক্ষার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২১ জুলাই ২৫ রোগীর মধ্যে ১০ জন, ২৩ জুলাই ৪৮ রোগীর মধ্যে ২২ জন, ২৪ জুলাই ৩৭ রোগীর মধ্যে ২৪ জন, ২৫ জুলাই ২৯ রোগীর মধ্যে ১৮ জন, ২৬ জুলাই ৩৪ রোগীর মধ্যে ১২ জন এবং গতকাল ৪৯ জনের রক্ত পরীক্ষা করে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে ২৬ জনের।
নগরের জিইসি এবং নিজাম রোডের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত এক সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত ৫৩ জনের পরীক্ষা করে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে ৩৩ জনের; শনাক্তের হার প্রায় ৬৩ শতাংশ।
অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল, ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিনিয়ত চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত হলেও এর সঠিক তথ্য যাচ্ছে না জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে। এ পর্যন্ত সাড়ে সাত শতাধিক মানুষ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের কথা বলছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এ হার আরও অনেক বেশি বলে দাবি জনস্বাস্থ্যবিদদের। তারা বলছেন, চট্টগ্রাম নগরের হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তথ্য দিচ্ছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে। শহর ও গ্রামের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই থেকে যাচ্ছে হিসাবের বাইরে। তাই প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা অবশ্যই অনেক বেশি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, চট্টগ্রামে গতকাল এক দিনে ৩৯ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে তাদের হিসাবে মোট রোগীর সংখ্যা ৮০৩।
২০ রোগীর সবার চিকুনগুনিয়া
চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়মিত বসেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এএসএম লুৎফুল কবির শিমুল। গত রোববার তাঁর চেম্বারে জ্বর নিয়ে আসেন ২০ রোগী। সবার শরীরে তীব্র জ্বরের পাশাপাশি ব্যথাসহ নানা শারীরিক জটিলতা থাকায় চিকুনগুনিয়া সন্দেহ করেন তিনি। সবাইকে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। রক্ত পরীক্ষায় সবারই চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়।
ডা. এএসএম লুৎফুল কবির সমকালকে বলেন, এবার আশঙ্কাজনক হারে চিকুনগুনিয়া রোগী পাচ্ছি। এ রোগে আক্রান্ত হলে গিঁটে ব্যথা, ফুসকুড়ি, দুর্বলতা, খাবারে অরুচির মতো সমস্যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হতে পারে।
বড় দুই সরকারি হাসপাতালে নেই পরীক্ষার সুযোগ
চিকুনগুনিয়ার রোগী বাড়লেও বন্দরনগরীর প্রধান দুই সরকারি হাসপাতাল– চমেক ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এ ভাইরাস পরীক্ষার সুযোগ নেই। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এ দুটি হাসপাতালে রোগীরা গেলেও রক্ত পরীক্ষার জন্য ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
আবার চিকুনগুনিয়ার নানা উপসর্গ থাকার পরও ঝামেলা ও বাড়তি খরচের কথা চিন্তা করে পরীক্ষা করাতে অনীহা দেখান অনেক রোগী। এ কারণে চিকুনগুনিয়া হওয়ার পরও চিকিৎসার আওতায় আসছেন না অনেকে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, প্রতিদিন চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ নিয়ে অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। তারা আমাদের এখানে চিকিৎসক দেখাতে পারলেও পরীক্ষা করাতে পারছেন না। বিষয়টি আমরা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। সেখান থেকে পরীক্ষার ব্যবস্থা না করলে আমরা কিছু করতে পারছি না।
হাসপাতালে যা দেখা গেল
গতকাল চমেক হাসপাতালে গিয়ে মেডিসিন, শিশু, হৃদরোগসহ কয়েকটি বিভাগের বহির্বিভাগের সামনে নারী-পুরুষের জটলা দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন গৃহিণী আক্তার বেগম। নগরের চকবাজারের বাসিন্দা এ নারী বলেন, ‘তিন দিন ধরে তীব্র জ্বরে ভুগছি। সঙ্গে গিঁটে ব্যথা। পরিচিত এক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেয়েও জ্বর নামছে না। উল্টো শারীরিক নানা জটিলতা বাড়ছে। তাই ডাক্তার দেখাতে এসেছি।’
পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ৩৮ বছর বয়সী মো. লোকমান বলেন, ‘টানা পাঁচ দিন জ্বরে ভোগার পর চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। সারা শরীরে ব্যথা; কিছু খেতে পারছি না। শরীর বেশ দুর্বল। দুই ছেলেমেয়েও জ্বরে ভুগছে।’
আন্দরকিল্লার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রধান গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে নারী-পুরুষের সারি। তাদের কারও জ্বর চার দিন, কারও কারও এক সপ্তাহ। পরিবারের একাধিক সদস্য জ্বরে আক্রান্ত বলেও জানান তারা। নগরের উত্তর কাট্টলীর মুন্সিপাড়ায় একই পরিবারের আটজন জ্বরে আক্রান্ত। তাদের একজন মো. মোর্শেদ বলেন, ‘এক সপ্তাহে পরিবারের সবাই জ্বরে আক্রান্ত। একজন সেরে উঠতে না উঠতেই আক্রান্ত হচ্ছেন আরেকজন। এ তালিকায় আছে তিন বছরের শিশু থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব। পুরো পরিবার এখন ছোটখাটো হাসপাতালে পরিণত।’
আইইডিসিআরের গবেষণা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ছয়টি ওয়ার্ড এবং আট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ১২ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় ৬৫ শতাংশ এডিস ইজিপ্টাই ও ৩২ দশমিক ৬৪ শতাংশ এডিস আলবোপিকটাস প্রজাতির অস্তিত্ব পেয়েছে আইইডিসিআর। সূচকের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি মশার অস্তিত্ব মিলেছে আগ্রাবাদে, ১৩৪ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পাহাড়তলীতে ১১০ শতাংশ। এ ছাড়া হালিশহরে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, চট্টেশ্বরী এলাকায় ৪৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ, নিজাম রোড এলাকায় ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ঝাউতলা এলাকায় ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এসব মান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত ঝুঁকিপূর্ণ সীমার চেয়ে বহু গুণ বলে মনে করছেন গবেষণা-সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এসব এলাকায় মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষকরা ১২৮টি বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে ৬২টিতে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছেন। তারা বলছেন, এডিস ইজিপ্টাই মশার আধিক্যের কারণে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত রয়েছে। সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের স্বাস্থ্য সংকট হতে পারে।
সমানতালে বাড়ছে ডেঙ্গু
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চট্টগ্রামে এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২৭ জন; মৃত্যু হয়েছে আটজনের। সর্বশেষ গত রোববার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শেবু চরণ ভৌমিক (৭৪) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নতুন করে আরও ১৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এক জরিপে ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে নগরীর ছয়টি এলাকাকে ‘লাল’, পাঁচটি এলাকা ‘হলুদ’, সাতটি ‘নীল’ এবং চার এলাকা ‘সবুজ’ তালিকাভুক্ত করা হয়। এসব এলাকাতেও মশক নিধন কার্যক্রম তেমন নেই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘কয়েক দিন পরপর বাসার চারপাশ নিজেরা পরিষ্কার করি। মশারি ছাড়া ঘুমাই না। এর পরও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। এখন দিন-রাত সমানতালে মশার অত্যাচার। তবু গত তিন মাসে মশার ওষুধ দিতে দেখিনি কাউকে।’ কর্নেলহাট এলাকার বাসিন্দা নূর হোসেন বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখি মেয়র অনেককে নিয়ে বিশেষ অভিযান উদ্বোধন করছেন। বাস্তবে তো মশা মারতে দেখি না।’ বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা সুজয় চৌধুরী বলেন, ‘মশা মরলে তো আমার পরিবারের তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতো না। প্রশাসন যা করছে, তা অনেকটা লোক দেখানো।’
জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এএসএম লুৎফুল কবির শিমুল বলেন, ‘চিকুনগুনিয়া যথেষ্ট পীড়াদায়ক। এবার জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে যে পরিমাণ চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হচ্ছে, তাতে অবস্থা বেশ ভয়াবহ মনে হচ্ছে।’
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, ‘অস্বাভাবিক হারে চিকুনগুনিয়ার রোগী পাওয়া যাচ্ছে। অবহেলা করে অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হচ্ছে।’