Search
Close this search box.

চীনের আগে ভারত সফরে যেতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরের আগে ভারত সফর করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। কিন্তু এ ব্যাপারে ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরের আগে ভারত সফর করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঢাকার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষ থেকে “ইতিবাচক” সাড়া পাওয়া যায়নি।’

আজ বুধবার ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে চার দিনের জন্য চীনে যাচ্ছেন। এ সফর সম্পর্কে দ্য হিন্দুকে শফিকুল আলম বলেন, সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং বাংলাদেশকে চীনা বিনিয়োগের জন্য বিশেষ করে উৎপাদন খাতে একটি গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরবেন।

ভারতের সঙ্গে ড. ইউনূস উষ্ণ সম্পর্ক চান উল্লেখ করেন শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আমরা আসলে আমাদের আগ্রহ দেখিয়েছিলাম এবং গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতীয় পক্ষকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফরের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। চীন সফর চূড়ান্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে এটি করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনও ইতিবাচক সাড়া পাইনি।’

দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ড. ইউনূস হলেন দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় নেতা, যাঁকে চার মাসের মধ্যে আতিথ্য দেওয়া হচ্ছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে এভাবে চার দিনের চীন সফর করেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা ওলি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘চীন সফর থেকে ফেরার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৩-৪ এপ্রিল ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে সম্মেলনের ফাঁকে অধ্যাপক ইউনূস এবং মোদির মধ্যে বৈঠকের জন্য আমরা অনুরোধ করেছি এবং আমরা ভারতের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও জানান, ২৬-২৯ মার্চ চীন সফরে থাকবেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে তিনি চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ড. ইউনূস বাংলাদেশকে একটি ব্যবসা-বান্ধব গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চান যা চীনা উৎপাদন ইউনিটগুলোকে সঠিক ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রদান করবে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের এজেন্ডা সম্পর্কে শফিকুল আলম বলেন, ‘২৮ মার্চ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর অধ্যাপক ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হবে। এ ছাড়া ২৭ মার্চ বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করবেন ড. ইউনূস।

এর আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে নিউইয়র্কে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে সময় প্রধান উপদেষ্টাকে ‘চীনা জনগণের পুরনো বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন নিউইয়র্কে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ে। একই বৈঠকে ড. ইউনূস বাংলাদেশে সৌর প্যানেল তৈরির জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার এক ভাষণে ড. ইউনূস জানান, মালয়েশিয়াও তাকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে যা তিনি গ্রহণ করেছেন। এ সময় তিনি ভারত, নেপাল, ভুটান এবং চীনের জন্য বাংলাদেশকে ব্যবসা-বান্ধব অর্থনীতি হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থান আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দিয়েছে। কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আমাদের একটি দীর্ঘ উপকূলরেখা রয়েছে যেখানে বেশ কয়েকটি শিল্প অঞ্চল এবং বন্দর রয়েছে। এটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতকে রূপান্তরিত করতে পারে।’