আমরা চুল ভালো রাখতে কত কিছুই না করে থাকি। দামি তেল ও শ্যাম্পু তো আছেই। ইন্টারনেট খুঁজে চুলের সিরাম বা জেল তৈরির পদ্ধতিও শিখে নিচ্ছি। এতেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না। চুল ঝরছে তো ঝরছেই। রুক্ষও হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। গরমের দিনে আবার মাথায় ঘাম বসে চুলের তৈলাক্ত ভাব বাড়ছে। শ্যাম্পু করেও সেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। চুল ভালো রাখতে প্রসাধনী সাময়িকভাবে কাজ করে— এমনটাই দাবি গবেষকদের।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে— চুল ভালো রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। তা কেবল প্রসাধনী কিংবা চুলের পরিচর্যা নয়। কী কী সেই নিয়ম, তা জানালেন গবেষকরা।
চুল ভালো রাখার প্রাকৃতিক উপায় জেনে নিন—
চুল ভালো রাখতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ভীষণ জরুরি। আমিষের মধ্যে ডিমে প্রোটিন ও বায়োটিন ভরপুর মাত্রায় পাওয়া যায়। চুলের গোড়া মজবুত করতে বায়োটিন অপরিহার্য। এর পাশাপাশি মাছেও ভালো মানের প্রোটিন থাকে। এ ছাড়া পমফ্রেট, কাতলা বা ইলিশ মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এর সঙ্গেই চুল পড়া বন্ধ করতে ও পাকা চুলের সমস্যা দূর করতে বাদাম ও বীজও খেতে হবে।
এ ছাড়া রোজমেরি অয়েল ব্যবহার করুন। রোজমেরি তেল চুল পড়া এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি মাথার তালুতে চুলকানি, খুশকি, রুক্ষ চুল ও ডগা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা দূর করতেও কার্যকরী। নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা রোজমেরি অয়েল মিশিয়ে চুলে মাখতে পারেন। গাছের পাতা জলে ফুটিয়েও মাথার ত্বকে তা মেখে রাখা যেতে পারে। তবে অনেকেরই এই নির্যাস থেকে ত্বকে অ্যালার্জি বা অস্বস্তি হতে পারে। তাই সরাসরি রোজমেরি অয়েল ব্যবহার করার আগে সতর্ক হতে হবে। রোজমেরি পাতার নির্যাস অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় মাখতে পারেন। স্নানের আগে মেখে ২০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
চুল সুন্দর রাখতে আয়রন ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। চুলের জন্য জরুরি আয়রন ও জিঙ্ক। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেলে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়বে। নতুন চুল গজাবে। চিকেন, নানা রকম ডাল, ছোলা, কুমড়ার বীজে আয়রন ও জিঙ্ক পাবেন। তিসির বীজ ও সূর্যমুখীর বীজে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। আলু, মাশরুম, বিন্সেও জিঙ্ক থাকে।
আর খুব বেশি টেনে চুল বাঁধলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়বেই। এখন নানা রকম কেশসজ্জার চল এসেছে। অভিজ্ঞ কারও থেকে করালে ভালো, নিজে থেকে করতে গেলে চুলের আরও বারোটা বেজে যাবে। তা ছাড়া চুলে নানা ধরনের রং করাচ্ছেন অনেকেই। এসব রঙের রাসায়নিক চুলের ক্ষতি করছে। রং করার পর চুলে সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করা জরুরি। এই ধরনের শ্যাম্পু রং বিবর্ণ না করে চুলের ময়লা পরিষ্কার করে।