ছাগলকাণ্ডে’ আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ এবং ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের পাসপোর্ট অবমুক্তি এবং তাদের অবাধ বিদেশযাত্রার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শামীম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ ও শফিকুর রহমান।
আইনজীবী এস এম শামীম হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত অক্টোবরে রিট আবেদনটি করা হয়েছিল। আজ আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়েছে।’ হাইকোর্টের অন্য কোনো বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপ করা হবে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, মক্কেলের কাছ থেকে এ ধরনের নির্দেশনা এখন পর্যন্ত তিনি পাননি।
কোরবানির জন্য ঢাকার মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ইফাত নামের এক তরুণের ১৫ লাখ টাকা দামে ছাগল কেনার ফেসবুক পোস্ট ঘিরে ঈদের আগে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা শুরু হয়। তখন সামনে আসতে থাকে ইফাতের পরিচয়। ইফাত নিজেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিসহ পোস্ট দিয়ে বাবার পরিচয় তুলে ধরেন। তখন ছেলে ইফাতকে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান।
একপর্যায়ে সামনে আসেন ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, ইফাত তাঁর মামাতো বোনের সন্তান। আর মতিউর রহমানই ইফাতের বাবা। ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের (স্ত্রীর) ছেলে। মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি ছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা। সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি নাম লেখান রাজনীতিতে।
পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ছাগলকাণ্ড নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে লাকির সম্পদ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। তখন বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে মতিউর-লাকি ও তাঁদের সন্তান তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই অনুসন্ধান দলের প্রধান দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের আবেদনে গত ২৪ জুন মতিউর, লাকি ও অর্ণবের পাসপোর্ট আটকে দিয়ে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। পাঁচ মাস আগের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মতিউর-কানিজ ও অর্ণব।