জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে ডিএমপির নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ চলছে। সমাবেশ ঘিরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডিএমপি সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই নিরাপত্তা বলয়ের মূল উদ্দেশ্য হলো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিশ্চিত করা এবং জননিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখা।

শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া সমাবেশ স্থল ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য পোশাকে এবং সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে।

অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেসব সড়ক দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ঢাকায় প্রবেশ করছেন সেসব সড়কেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সকাল থেকে দেখা যায়, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, বাংলা মোটর, দোয়েল চত্বর ও টিএসসি হয়ে দলটির নেতাকর্মীরা দলে দলে বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে সমাবেশস্থলে একত্রিত হচ্ছেন। এ সময় এসব এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। যাতে করে নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারেন। আর কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে। এছাড়া এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে।

অন্যদিকে সমাবেশস্থল ও এর আশপাশ এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া সমাবেশস্থলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেন সুন্দর থাকে সেজন্য পুলিশ সদস্যরা সমন্বয় করে কাজ করছেন।

জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য সমাবেশ স্থল ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। যাতে করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য পুলিশ সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দলটির নেতাকর্মীরাও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছেন। তারা সমাবেশে আসা দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন শৃঙ্খলা মেনে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন।

এদিকে দলটির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন জায়গায় ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে বলে ট্রাফিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিক রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) কাজী রুমানা নাসরিন বলেন, সকালের ধাক্কাটা আমরা কিছু সামলিয়েছি। নেতাকর্মীদের নিয়ে আসা বড় বাসগুলোকে আমরা ভেতরে প্রবেশ করতে দেইনি। আর তারাও বড় বাস নিয়ে আসিনি বড় বাস দূরে থামিয়ে নেতাকর্মীরা হেঁটে সমাবেশস্থলে এসেছেন। আর কিছু জায়গায় আমরা ডাইভারশন দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আমরা রাস্তায় আছি এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তবে এত বড় জনসমাবেশ যেহেতু তাই কিছুটাতো প্রভাব পড়বেই রাস্তায়।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টা জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হবে। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সমাবেশ থেকে আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও।