জিলহজ্জের প্রথম দশ দিন: আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলোর অন্যতম

মোহাম্মদ ইউছুপ, চট্রগ্রাম:
ইসলামী ক্যালেন্ডারের পবিত্র মাসগুলোর একটি হলো জিলহজ্জ। এর প্রথম দশ দিনকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা দিয়েছেন, যা কোরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এ সময়ের প্রতিটি দিনেই রয়েছে অশেষ সওয়াবের সুযোগ।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন:
وَالْفَجْرِ۝١ وَلَيَالٍ عَشْرٍ۝٢
“শপথ ফজরের, এবং শপথ দশ রাতের।”
— (সূরা আল-ফজর: ১-২)
তাফসিরবিদগণ বলেন, এখানে “দশ রাত” বলতে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ রাত বোঝানো হয়েছে (তাফসির ইবনে কাসির, তাবারী)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
“জিলহজ্জের এই দশ দিনে সৎকর্মের মতো অন্য কোনো দিনে তা আল্লাহর কাছে এত প্রিয় নয়।”
— (সহীহ বুখারী: ৯৬৯)
সাহাবীগণ জানতে চাইলেন, “হে রাসূল! জিহাদও নয়?”
তিনি বললেন, “জিহাদও নয়, তবে যে ব্যক্তি নিজের জান ও মাল নিয়ে জিহাদে গিয়েছিল এবং কিছুই ফিরিয়ে আনেনি।”
বিশেষ আমলসমূহ:
১. রোযা রাখা: আরাফার দিন (৯ জিলহজ্জ) রোযা রাখা হলে বিগত ও আগামী এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায় (সহীহ মুসলিম: ১১৬২)।
২. তাকবীর বলা:
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
৩. কোরবানি: জিলহজ্জের ১০ তারিখ কোরবানির মাধ্যমে ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগ স্মরণ।
৪. তাওবা, ইস্তেগফার ও দান-সদকা করা।
ফিকহি দিক থেকে:
হানাফি, শাফেয়ী, মালিকি ও হাম্বলি মাজহাবসমূহ এই দশ দিনের মর্যাদা স্বীকার করেছেন। তবে রোযা ফরজ নয়, বরং মোস্তাহাব।
উপসংহার:
এই দশ দিন আমাদের জন্য আমল, আত্মশুদ্ধি ও নৈকট্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ। আল্লাহর দরবারে নৈকট্য অর্জনের এমন মর্যাদাপূর্ণ সময় বছরের আর কোনো অংশে পাওয়া যায় না।