নিখোঁজ শিশু সিফাতের মরদেহ উদ্ধার, মুক্তিপণ দিয়েও সন্ধান মেলেনি আয়মানের

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার পাঁচবাগ ইউনিয়নের দুইটি গ্রাম থেকে গত চারদিন আগে আলাদা সময়ে নিখোঁজ হয় ৫ ও ১০ বছর বয়সের দুই শিশু। এই দুই শিশুর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে না পেয়ে পরদিন ১০ বছর বয়সের শিশুর মরদেহ বাড়ির কিছু দূরের এক পুকুরে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। আরেক শিশুর পরিবারের কাছে অপরিচিত নম্বর থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে। না দিলে ইনজেকশন পুশ করে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে।

এ ঘটনার পর নিখোঁজ শিশুর পরিবার দিশাহারা।

গত শুক্রবার (১১ জুলাই) গফরাগাঁয়ের পাগলা থানার ওই ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রাম থেকে বেলা সাড়ে ১১টায় নিখোঁজ হয় ওই গ্রামের সুলতান মিয়ার নাতি আয়মান। সে নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামের আকন্দ বাড়ির প্রবাসী আল-আমীন আকন্দের ছেলে। কিছু সময় পর নিখোঁজ হয় স্থানীয় অতারবাড়ি চর শাঁখচুড়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে সিফাত মিয়া।

জানা যায়, দুই শিশু নিখোঁজের পর দুই পরিবার সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করে তাদের সন্ধান না পেয়ে পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এর মধ্যে রাত ৯টার দিকে আয়মানের মামা জাকিরের কাছে মেসেঞ্জারে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ওই সময় মুক্তিপণ চাওয়া ব্যক্তির কাছে মোবাইলে ভিডিও চাইলে ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাত ২টার দিকে সিফাতের বোনের ইমো নম্বরে জানানো হয়- ১৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে দ্রুত শিশু সিফাতকে মুক্তি দেওয়া হবে।

সিফাতের নানা সুলতান উদ্দিন জানান, ওই সময় সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ২ হাজার টাকা পাঠিয়ে বাকি টাকা দেওয়ার আগেই সব নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে বাড়ির কিছু দূরে পুকুরে সিফাতের রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে, আরেক শিশু আয়মানের পরিবারের কাছে গত শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় নানা অঙ্কের টাকা চাওয়া যায়। বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলা হয়।

এ অবস্থায় নিখোঁজ শিশু আয়মানের নানা সুলতান উদ্দিন ২৮ হাজার টাকা পাঠান। এরপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর পর গতকাল রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেল থেকে থেমে থেমে মুক্তিপণ দাবি করে আসছে একটি চক্র।গফরগাঁও পাগলা থানার ওসি মো. ফেরদৌস আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিখোঁজকে উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তার আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’