প্রতিযোগিতা করে লুটপাট চালানো হয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে

উদ্বোধনের দুই বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যায়নি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। বাক্সবন্দি শতকোটি টাকার যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ। চালুর আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ অনেক যন্ত্রাংশের।

জানা গেছে, হাসপাতাল নির্মাণের আগে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে জনবলকাঠামো ও হাসপাতাল পরিচালনার নীতিমালার তথ্য জমা দেওয়া হয়নি। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে লুটপাটের প্রতিযোগিতায় নামেন বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার আলী।

 

সাবেক উপাচার্য অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেন তিন শতাধিক অদক্ষ মেডিক্যাল অফিসার, নার্স ও কর্মচারী। আর হাসপাতাল নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি কিনে অর্থ আত্মসাৎ করেন প্রকল্প পরিচালক। শুরুতে দুজনের সম্পর্ক আস্থার মধ্যে থাকলেও শেষটা ছিল টানাপড়েনের।

তখন গণমাধ্যমে একের পর এক খবর আসতে থাকে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের দুর্নীতি নিয়ে। সংবাদ প্রকাশের পর বন্ধ হয়ে যায় লোকবল নিয়োগ। তবে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিষয়টি চালু থাকে। বিএসএমএমইউয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৪০৩ রকমের ছয় হাজার ৬১২টি চিকিৎসাযন্ত্র কেনা হয় প্রায় আড়াই শ কোটি টাকায়।

 

জনবল না থাকায় ৭০ শতাংশ যন্ত্রপাতি এক দিনও ব্যবহার হয়নি। এসব যন্ত্রের মেয়াদ রয়েছে তিন বছরের কমবেশি। ফলে ব্যবহারের আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক যন্ত্রের। এদিকে যন্ত্রাংশ ত্রুটির দায় সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবর্তনেরও সুযোগ নেই।

গতকাল সোমবার দুপুরে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, নিচতলার রিসিপশনের পুরো লাউঞ্জে কোনো এসি নেই।

শীতের দিনেও গরম অনুভূত হচ্ছে। ১০০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তালা ঝুলছে। বন্ধ আছে দুটি ভিভিআইপি ও চারটি ভিআইপি কেবিন। ৫৮ সাধারণ কেবিনে ভর্তি রয়েছে ২৩ জন রোগী। এ ছাড়া ১০০ শয্যার জরুরি ইউনিটে চিকিৎসা চলছে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগীর। উদ্বোধনের পর কিছুদিন বেশ কিছু অস্ত্রোপচার হলেও এখন তা-ও বন্ধ। 

হাসপাতালের কিছু জায়গায় এসির পাইপ চুইয়ে দেয়াল ভিজে আছে। শৌচাগারের পানি ওয়ার্ড ও কেবিনে চলে আসে। বেশ কিছু ফ্লোর টাইলসে শেওলা পড়ে গেছে। পলেস্তারা ও পেইন্ট খসে পড়ছে।