Search
Close this search box.

ভর্তি নয়, যেন যুদ্ধে নামছে ছাত্ররা!

এক দাওরায়ে হাদীস ছাত্রের কলম থেকে উঠে আসা বাস্তব চিত্র

মোহাম্মদ ইউছুপ চট্রগ্রাম:
ভর্তির সিজন এলেই মাদরাসাগুলোর দরজায় দেখা যায় ব্যতিক্রমী দৃশ্য। সারি সারি ছাত্র, চোখে স্বপ্ন—মুখে নীরবতা। ইলমের অন্বেষণে গ্রামের সহজ-সরল ছেলেগুলো শহরে আসে, কিন্তু তাদের স্বপ্নের যাত্রার শুরুটায় ঘটে হৃদয়বিদারক কিছু বাস্তবতা।

একজন দাওরায়ে হাদীসের বর্তমান ছাত্র নিজের অভিজ্ঞতা ও তীব্র আবেগ নিয়ে বলেন:

ভর্তি নয়, মনে হয় যুদ্ধে নামছি!
ফরম কিনতে গেলে দাম দ্বিগুণ, তাও আবার বলেই দেয়—‘শেষের দিকে আসছো, সাবধানে ফরম পূরণ করো।’ এরপর দীর্ঘ সিরিয়াল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা। ইন্টারভিউর সময় এসে যায়, কিন্তু হুজুর তখন খাওয়ায় ব্যস্ত, কেউ বলেন ফোনে জরুরি কথা বলছেন—অপেক্ষা করি, আরেকটু করি… এভাবেই সময় গড়ায়।”

তিনি বলেন,

টানা বেলা না খেয়ে থাকে।
অথচ হুজুর আসেন ২ ঘণ্টা পর, তাও আবার একটুখানি ভুলের পর বললেন—‘তুমি বাদ।’
চোখে পানি আসলো না, কারণ ক্লান্তি আর অপমানে শরীরই ভেঙে পড়ছিলো। তারপর ঘুরে বেড়িয়েছি এক মাদরাসা থেকে আরেকটায়। হাতে থাকা সামান্য টাকাগুলো ফুরিয়েছে যাতায়াত, ফরম, খাওয়া আর ‘নতুন ড্রেসকোড’ মেনে চলতে গিয়ে।”

শেষে আম্মুকে ফোন দিলাম। কাঁপা কণ্ঠে বললাম
ভর্তি হইছিকিন্তু খাওনের টেহা  কমায়নাই…’

তার প্রশ্ন—

“ভর্তি প্রক্রিয়ায় এত কড়াকড়ি, এত কাঠিন্য কেন?
একটু সহানুভূতি, একটু মমতা কি খুব বেশি চাওয়া?”

তিনি আরও বলেন,

“এই ছাত্রদের দোয়াতেই তো মাদরাসার বরকত, ইজ্জত আর গ্রহণযোগ্যতা। তারা আপনার শিক্ষার্থী না—আপনার আমানত। আপনি তাদের শুধু শিক্ষক নন, আপনি রাহবার—পথপ্রদর্শক।”

🔸 একটি আবেদন, একটি আহ্বান

ভর্তির মৌসুমে ছাত্রদের মন ভাঙবেন না। দরজা বড় না হোক—মনটা অন্তত বড় করুন।
এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কেউ দুনিয়ার মোহে নয়, বরং আখিরাতের আলো খুঁজতেই মাদরাসায় আসে।
তাদের চোখে আপনি একজন মুরুব্বি, একজন উস্তাদ, একজন পাথেয়।

তাদের হাসিমুখই হোক আপনার প্রতিষ্ঠানিক সুনামের পরিচয়।