ভোলায় ছাত্রদল নেত্রীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, তদন্ত চায় সংগঠন

ভোলায় নিখোঁজ হওয়ার চারদিন পর ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার লাশ উদ্ধার হলেও তার মৃত্যু রহস্য নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ।
তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এদিকে ছাত্রদল নেত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানা গেছে, ভোলা পৌর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা মাসুদ রানার মেয়ে ও ভোলা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। দীর্ঘদিন ধরে কলেজ শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের হাত খরচের টাকা জোগাড় করতেন ইপ্সিতা। ৬ মাস আগে স্বামী মেহেদী হাসানের সঙ্গে ডিভোর্স হয় তার। এরপর থেকে বাবার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করতেন।

গত ১৭ জুন প্রাইভেটে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হন ইপ্সিতা। এরপর থেকে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা গেলেও পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ওইদিন সকালেই ভোলা থেকে কর্ণফুলী-৪ লঞ্চে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন ইপ্সিতা। তবে গভীর রাতে হঠাৎ করেই লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। তবে তিনি ঝাঁপ দিয়েছেন নাকি ফেলে দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।

ঘটনার চারদিন পর ২১ জুন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের বাবা মেয়ের ছবি দেখে শনাক্ত করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কলেজপড়ুয়া এ ছাত্রী এর আগেও কলেজের চতুর্থ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন-এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, সে যাত্রায় সহপাঠীরা তাকে রক্ষা করেন।

তবে কী কারণে ইপ্সিতা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তা জানেন না সহপাঠী কিংবা তার বাবা-মা।
ইপ্সিতার বাবা মাসুদ রানা বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা বলতে পারছি না, তবে এটা যদি হত্যা হয়ে থাকে তাহলে মেয়ে হত্যার বিচার চাই। পুলিশ বলছে, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

কলেজছাত্রী মা ইয়ানুর বেগম বলেন, ঘটনার দিন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ইপ্সিতা। এরপর আর তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে লাশ পাওয়া যায় নদীতে। কী হয়েছিল সেদিন তা বলতে পারছি না।

সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চান সহপাঠীরা। কয়েকজন সহপাঠী বলেন, ইপ্সিতার সঙ্গে সেদিন কী ঘটেছিল জানি না, তবে যদি হত্যাকাণ্ড বা ধর্ষণের ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে দোষীদের বিচার চাই, সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে আর কোনো মেয়েকে এভাবে মরতে না হয়।

এদিকে মৃত্যুর দুইদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে রাজনীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন সুকর্ণা। তবে তার মৃত্যুর ঘটনা ষড়যন্ত্র, ধর্ষণ নাকি স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা- সেই রহস্য উদঘাটন হয়নি।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাইন পারভেজ বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশ বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
জানা গেছে, কলেজ শাখা ছাত্রদল নেত্রীর মরদেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নৌ পুলিশ বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।