প্রথম সপ্তাহে আমি রাজা, দ্বিতীয় সপ্তাহে ভিখারি! মাসের প্রথম দিনেই মনে হয়, “এইবার ঠিকঠাক হিসাব করে চলব।” আর তৃতীয় দিনেই দেখি ডেলিভারি অ্যাপ থেকে তিনবার “Buy 1 Get 1” অফারে অর্ডার করে ফেলেছি।
বাজেট বানানো মানে কল্পনার এক রাজ্য। আমি এক্সেল ফাইল বানাই, তাতে খরচ, সঞ্চয়, বিল—সবকিছু সাজানো থাকে। বাস্তবে দেখি, দুই দিনের মাথায় সব ব্যালেন্স উধাও।
মজার বিষয় হলো, মাসের মাঝামাঝি থেকেই আমি নূরানী চেহারা নিয়ে বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে থাকি, যেন বলছি, “তুইই আমার শেষ ভরসা!” আর বন্ধু তখন বলে, “ভাই, আমিও স্যালারি পাই নাই।”
সবচেয়ে ভয়ংকর মুহূর্ত হলো যখন ফ্রিজে শুধু একটি ডিম পড়ে থাকে, আর আপনি হিসাব করতে থাকেন—“এটা আজ খাব, না আগামীকাল?” এমন সময় ঘরে কেউ অতিথি এলেই মন বলে, “দোস্ত, যুদ্ধ কর!”
মাস শেষ হলে মনে হয়, “এইবার শিখে গেলাম।” আর পরের মাসে একই নাটক—নতুন দৃশ্য, পুরনো চরিত্র!
📰 রম্য রচনা ৩: ফেসবুক পণ্ডিতদের রাজত্বে আমরা!
বাংলাদেশে দুই জাতি সবসময় খালি হাতে কিছু না কিছু ‘ঘোষণা’ দেয়—এক, হুজুর; দুই, ফেসবুক বিশ্লেষক।
ফেসবুক এখন আমাদের নিজস্ব টকশো প্ল্যাটফর্ম। সেখানে সবাই বিশেষজ্ঞ। করোনা আসলে সবাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হয়ে যায়। ক্রিকেট শুরু হলে সবাই জাতীয় কোচ। আর নির্বাচন এলে? সবাই একেকজন রাজনৈতিক থিঙ্কট্যাঙ্ক!
একবার আমার এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম, “তুই এইসব তত্ত্ব কোথা থেকে পেলি?” সে গর্ব করে বলে, “এক ভাইয়ের পোস্টে পড়েছি।” সেই ভাই কে? কে জানে! পোস্টে কোনো সূত্র নেই, ব্যাকরণ নেই, শুধু CAPS LOCK আর ইমোজি ভরপুর।
তবে সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, যাদের বায়োতে লেখা থাকে—“Truth Hurts” বা “Don’t judge me without knowing me।” ওদের কমেন্টে কেউ কিছু বললেই তারা বলে, “তুই কার পেইড এজেন্ট?”
ফেসবুক এখন এমন এক জায়গা, যেখানে একজন কবি, বিজ্ঞানী, প্রেমিক, রাজনীতিবিদ, ক্রিকেট বোদ্ধা—সব একসঙ্গে বাস করে। একাউন্ট একটাই, কিন্তু রোলে হাজারটা!