- রাজধানীর মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কসমি ফার্মা নামে একটি কেমিক্যাল গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি গার্মেন্টস কারখানায়। ১৬টি মরদেহই ওই গার্মেন্টস কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মৃতরা সবাই গার্মেন্টস কারখানাটির শ্রমিক।
এদিকে ঘটনার পর প্রায় ১১ ঘণ্টা পার হলেও রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
অগ্নিনির্বাপণ সংস্থাটি বলছে, কেমিক্যাল গোডাউন থেকেই আগুনের সূত্রপাত। আগুনে সৃষ্ট বিষাক্ত ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুপুর পৌনে ১২টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। পরে ইউনিটের সংখ্যা বাড়িয়ে ১২টি করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিয়ালবাড়ির একটি গার্মেন্টস ও সংলগ্ন কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।’
তিনি জানান, পোশাক কারখানাটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
তিনি বলেন, ‘গোডাউনটিতে অন্তত ৬-৭ ধরনের কেমিক্যাল ছিল। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দ্রুত ছড়িয়েছে, তাই গার্মেন্টস অংশে থাকা কর্মীদের বাইরে বের হতে পারেননি কিংবা ছাদে উঠতে পারেননি। এ কারণেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’
এদিকে, ভয়াবহ এই আগুনে নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, ভবনটির ছাদের গেট বন্ধ থাকায় আগুন লাগার পর তারা বের হতে পারেননি।
উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়ায় অনেকেই ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ স্বজনের জন্য। তবে নিখোঁজের সংখ্যা কত তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে প্রিয়জনের জন্য কেউ কেউ হাতে ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা জানেন না, প্রিয় মানুষটি বেঁচে আছেন কিনা। কেবল মানুষটিকে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন স্বজনেরা।
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহে আমাদের ক্রাইম সিন ইউনিট ও কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপার্টরা কাজ করছেন। আগুনের উৎস ও বিস্তারের কারণ নির্ধারণে আলামতগুলো গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করা হবে।’