যশোরে এইডস আক্রান্ত এক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এটি তার ২য় সন্তান। সংক্রমণ ঝুঁকি সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনায় রোববার (১ জুন) যশোর জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার একটি ছেলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারটি সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে হাসপাতালের গাইনি রোগীদের জন্য নির্ধারিত অস্ত্রোপচার কক্ষটি দুই দিন বন্ধ থাকবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, এইডস আক্রান্ত এই নারীর অস্ত্রোপচারের জন্য গত কয়েকদিন ধরে চলছে নানান সতর্কতামূলক প্রস্তুতি। এটি এ হাসপাতালে দ্বিতীয় কোন এইডস রোগীর অস্ত্রোপচার। নবজাতক ও পজেটিভ প্রসুতি সুস্থ আছেন। তবে তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গাইনি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেসমিন সুলতানার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন রোববার বেলা ১২টার দিকে। এর আগে সকাল ১০টায় অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
হাসপাতাল সূত্র আরো জানায়, ছয়মাসের অন্তঃস্বত্ত্বাকালে পরীক্ষা নিরীক্ষায় তার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে জানা যায়। কিন্তু এইডস আক্রান্ত এই রোগীর অস্ত্রোপচারের মত প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এই হাসপাতালে নেই। তাছাড়া এ হাসপাতালে এইডস আক্রান্ত রোগীর অপারেশন করা হলে পরবর্তী তিনদিন অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এই নিয়ে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরামর্শ দেয়া হয়, এইডসে আক্রান্ত প্রসূতিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তরের। কিন্তু প্রসূতি রোগী দরিদ্র, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার সামর্থ্য নেই। যে কারণে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে অস্ত্রপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্বজনরা জানান, ২০১৮ সালে অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত হয় মনিরামপুর উপজেলার ওই গৃহবধুর। এরপর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সার্জারির মাধ্যমে ওই গৃহবধূ সুস্থ হন। কিন্তু তার শরীরে বাসা বাঁধে মরণঘাতক এইডস। গোপনে বাড়িতে চলে এইডস রোগের চিকিৎসাও। এইডস রোগের চিকিৎসার মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হন ওই গৃহবধূ। ২০১৯ সালে করোনাকালীন সময়ে এই হাসপাতালে তার প্রথম সিজারিয়ান অপারেশনটি সম্পন্ন হয়।