যুদ্ধ কখনো গণতন্ত্র বয়ে আনে না : নোবেলজয়ী ইরানি মানবাধিকারকর্মী

ইরানজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির আলোচিত মানবাধিকারকর্মী এবং সালের নোবেল পুরস্কারজয়ী নার্গিস মোহাম্মদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ কখনোই গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা স্বাধীনতা বয়ে আনে না—এ কথা আমি নিশ্চিতভাবে জানি।’

নরওয়ের সংবাদপত্র ক্লাসেক্যাম্পেন-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদি বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না, যুক্তরাষ্ট্রের বোমা ইরানি জনগণকে মুক্তি দিতে পারে।’

নারী অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকা নার্গিস মোহাম্মদি ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থার অন্যতম কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। এই কার্যক্রমের জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তবু তিনি মনে করেন, কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ নয়, বরং ইরানিদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমেই দেশে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মোহাম্মদির এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ, ইসরায়েলি হামলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এ ধরনের বিবৃতি আন্তর্জাতিক পরিসরে ইরানের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক অবস্থান প্রতিফলিত করছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ইরানে নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য অহিংস সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৩ সালে নোবেল পান নার্গিস মোহাম্মাদি। সেসময়ও তিনি কারাবন্দী ছিলেন। ফলে নরওয়ের অসলোতে নোবেল শান্তি পুরস্কার অনুষ্ঠান অংশ নিতে পারেননি তিনি। তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন তার দুই সন্তান। এ সময় তাঁর অনুপস্থিতি বোঝাতে মঞ্চে একটি খালি চেয়ার রাখা হয়।