টেকনাফে মানব পাচারকারীদের আস্তানায় অভিযান, নারী-শিশুসহ ৮ বন্দি উদ্ধার হাটহাজারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল গৃহকর্মীর জেনে নিন কি ঘটেছিল সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, টানা ৩ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জামায়াতে ইসলামীসহ চার দলের ১২ দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা সমীক্ষাতেই চারলেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পুকুরে ডুবে যুবকের মৃত্যু বোয়ালখালীতে জাতিসংঘ অধিবেশন শেষে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় চট্টগ্রামের অঙ্গীকার টেকনাফে মানব পাচারকারীদের আস্তানায় অভিযান, নারী-শিশুসহ ৮ বন্দি উদ্ধার হাটহাজারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল গৃহকর্মীর জেনে নিন কি ঘটেছিল সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, টানা ৩ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জামায়াতে ইসলামীসহ চার দলের ১২ দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা সমীক্ষাতেই চারলেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পুকুরে ডুবে যুবকের মৃত্যু বোয়ালখালীতে জাতিসংঘ অধিবেশন শেষে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় চট্টগ্রামের অঙ্গীকার টেকনাফে মানব পাচারকারীদের আস্তানায় অভিযান, নারী-শিশুসহ ৮ বন্দি উদ্ধার হাটহাজারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল গৃহকর্মীর জেনে নিন কি ঘটেছিল সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, টানা ৩ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জামায়াতে ইসলামীসহ চার দলের ১২ দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা সমীক্ষাতেই চারলেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পুকুরে ডুবে যুবকের মৃত্যু বোয়ালখালীতে জাতিসংঘ অধিবেশন শেষে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় চট্টগ্রামের অঙ্গীকার
সমীক্ষাতেই চারলেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক
সমীক্ষাতেই চারলেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক
১ অক্টোবর, ২০২৫ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। নামেই শুধু মহাসড়ক। বাস্তবে এটির প্রশস্ততা যেন কোনো গ্রামের সড়কসমান! দেশের অন্যতম ব্যস্ততম ১৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটির ৪০ কিলোমিটারজুড়ে প্রশস্ততা মাত্র ১৮ ফুট। অবশিষ্ট অংশের প্রস্থও মাত্র ৩৪ ফুট। সড়কটি সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতিতে পার হয়েছে বছরের পর বছর। অবশেষে-আলোর মুখ দেখছে এই সড়ক। সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণে মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষা চালানো শুরু করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।
২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের পৃথক সমাবেশে মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই বছরের ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান ওই সময়ের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যদিও এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি পরের বছরগুলোতে।
সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণে সবেমাত্র মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষা শুরু করেছে জাইকা। তবে চারলেনে উন্নীতকরণের আগে ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (১) নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যানজটপূর্ণ এলাকায় চারটি বাইপাস এবং একটি ওভারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, যেখানে জাইকা অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। ইতিমধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে প্রকল্পটির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তবে এখনো বাকী রয়েছে পরামর্শক নিয়োগ, ডিজাইন আর টেন্ডারের কাজ।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে ইমম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (১) পরিচালক সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শ্যামল ভট্টাচার্য বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় দোহাজারী, আমিরাবাদ ও চকরিয়ায় বাইপাস এবং সাতকানিয়ার কেরানিহাটে ওভারপাস নির্মাণের লক্ষ্যে করা সমীক্ষার কাজ শেষ পর্যায়ে। জাইকা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। পরামর্শক নিয়োগের কাজ শেষ পর্যায়ে। পরামর্শক নিয়োগ হলেই কাজের গতি বাড়বে। ডিজাইনের কাজ শুরু হবে। এরপর টেন্ডার দেয়া হবে। প্রতিটি বিষয় জাইকা নিবিড়ভাবে তদারকি করছে।
প্রকৌশলী শ্যামল কুমার জানান, প্রথম ধাপে তিন বাইপাস এক ওভার পাস নির্মাণের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করতেও সম্মত হয়েছে জাইকা। তারা বর্তমানে সড়কের সমীক্ষার কাজ করছে। তবে সড়কটি চারলেন হবে না ছয় লেন হবে তা সমীক্ষার পর জানা যাবে। আর পুরো সড়কের কাজ শেষ হলে টোল সড়ক হবে কি হবে না তা নির্ভর করবে সরকারি সিদ্ধান্তের উপর।
এদিকে, ২০২৬ সালে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এজন্য মাতারবাড়ি থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। এরপর গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে কনটেইনার ও কাভার্ডভ্যানে পণ্য সরাদেশে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু চারলেন বা ছয় লেনে সড়কটি স¤প্রসারণ না করলে এসব পণ্য কীভাবে পরিবহন হবে তা নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি কারো কাছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ১৫৯ কিলোমিটারের মধ্যে নগরীর বহদ্দারহাট মোড় থেকে শিকলবাহা ওয়াই জংশন পর্যন্ত আট কিলোমিটার এবং কক্সবাজার শহর থেকে লিংক রোড বাঁকখালী নদী পর্যন্ত আরও ১০ কিলোমিটার সড়ক ইতিমধ্যে চারলেনে উন্নীত করা হয়েছে। নতুন তিন বাইপাস ও এক ওভারপাসের কাজ শেষ হলে আরও ২৪ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে স¤প্রসারিত হবে। এর বাইরে ক্রস বর্ডার প্রকল্পের আওতায় চারটি সেতুর সঙ্গে যুক্ত আরও পাঁচ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত হবে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৭ কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার প্রকল্প হাতে আছে।
সওজ সূত্র জানায়, দীর্ঘসূত্রতার কারণে অবশিষ্ট ১১২ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করতে হলে নতুন করে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে পটিয়া বাইপাস সড়ক পর্যন্ত অংশটি সরকারি অর্থায়নে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বিজিসি ট্রাস্ট থেকে সাতকানিয়া কেরানীহাট পর্যন্ত অংশটি ৩৪ ফুট প্রশস্ত করণের কাজ চলছে।
জানা যায়, ২০১৯ সালে তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে গেলে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তখন মারুবিনি কর্র্পোরেশন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে টোল সড়ক হিসেবে চারলেনে উন্নীত করতে সম্মত হয়। সরকার শুরুতে তাতে সম্মতি দিলেও পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এটা জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা বা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারা এ মহাসড়ক উন্নয়ন ও স¤প্রসারণ নিয়ে ধীরে চলো নীতি নেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩-১৫ সালে সুইডিশ কনসালট্যান্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করতে সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষা প্রতিবেদনে ২২৫ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের সুপারিশ করা হয়। ওই সময় ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। পরে এটি ‘কন্ট্রোলড-একসেস হাইওয়ে’ হিসেবে নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করে সওজ। ফলে কমে যায় মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য। পরে দৈর্ঘ্য ধরা হয় ১৩৬ কিলোমিটার। এজন্য ১৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবও (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়। ওই নকশায় মহাসড়কটির প্রশস্ততা ধরা হয়েছিল ৮২ ফুট। দুই পাশে ধীর গতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের কথাও বলা হয়েছিল। পাশাপাশি ৩৩টি সেতু, ১৩৯টি কালভার্ট, ১৩টি ফুটওভার ব্রিজ ও দুটি ফ্লাইওভারের কথা বলা হয়েছিল। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ৩১৬ হেক্টর জমি অধিগ্রগ্রহণ করতে হবে সরকারকে। পরে আবারও সমীক্ষা চালায় জাপানের কোম্পানি মারুবেনি। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে মহাসড়কটি নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। ২০১৯ সালে প্রকল্পটির ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি।