নীতিগত সমস্যা, অর্থায়নে বাধা, অবকাঠামোর অভাব ও পোশাকবহির্ভূত রপ্তানিকারকদের দুর্বল দর-কষাকষির ক্ষমতাকে রপ্তানি আয়ের বাধা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনা থাকার পরও আরো অনেক খাত বিকশিত হয়নি। ফলে দেশের পণ্য রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের হিস্যা এখনো ৮১ শতাংশের বেশি। রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আলোচিত হলেও অগ্রগতি হয়েছে সামান্য। বাস্তবে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। তৈরি পোশাক এখনো রপ্তানিতে আধিপত্য বজায় রেখেছে। দেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে ১১৮ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ৪৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। পোশাকবহির্ভূত পণ্যের রপ্তানি ৮১ কোটি ১০ লাখ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০০ কোটি ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৬১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল এক হাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শুধু নভেম্বরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৩০ কোটি ৬১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ২৮৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আয় এসেছে তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলার; যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ দশমিক ২৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, তৈরি পোশাকের চেয়ে অন্য খাতে প্রণোদনা কম হওয়ায় নতুন পণ্য রপ্তানি বিকশিত হচ্ছে না। বহুমুখীকরণে সব পণ্যের সহায়তা সমান হওয়া উচিত।
ইপিবির তথ্য মতে, অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার। বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, যা আগের বছর থেকে বেড়েছে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৪ কোটি ১৭ লাখ ডলার। আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ।