
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে শুধু চিকিৎসার ওপর নির্ভর করা সম্ভব নয়। বরং সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়, সচেতনতা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত স্ক্রিনিং, হেলথ ইন্সুরেন্স এবং রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ একসাথে না হলে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে না। বরং স্তন ক্যান্সার মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সিএসসিআর হাসপাতালের কনফারেন্স হলে দৈনিক পূর্বকোণ আয়োজিত ‘চিকিৎসা, সহানুভূতি ও সমাজ- একত্রে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এবং সিএসসিআর ও পিজিএস একাডেমিয়ার সহযোগিতায় চলমান ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা মাস কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
পিজিএস একাডেমিয়ার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. খন্দকার এ. কে আজাদের সঞ্চালনায় আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী, আইসিডিডিআরবি’র সংক্রামক বিভাগের সিনিয়র পরিচালক এবং ভাইরলজি ল্যাব ও জেনম সেন্টারের প্রধান ড. মুস্তাফিজুর রহমান, সিএসসিআর’র চেয়ারম্যান ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোরসেদুল করিম চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুন্নাহার, প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. রওশন মোরশেদ, মানসিক রোগ বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাহফুযুল হক, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাসুদ করিম, রেডিওথেরাপি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. ফারহানা আকতার, সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাকেরা আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজমা মাহবুব, সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েরা বানু শিউলী, ক্যান্সার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রাকিবুল হাসান, দৈনিক পূর্বকোণ’র পরিচালক রাইসিনা চৌধুরী, দৈনিক পূর্বকোণ’র চিফ রিপোর্টার মো. সাইফুল আলম, বিডিনিউজ ২৪ ডট কম’র সিনিয়র রিপোর্টার মিন্টু চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রামে এ বছরের ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম সারাদেশে সাড়া ফেলেছে। সরকারি-বেসরকারি, গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন, সবাই একত্রে কাজ করছে বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।
গোলটেবিলে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামে সচেতনতা কার্যক্রম সাড়া পেলেও কেবল সচেতনতা বা চিকিৎসার ওপর নির্ভর করে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব নয়। বরং জেলা ও উপজেলা সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত স্ক্রিনিং ব্যবস্থা চালু করা, গবেষণার ফলাফল নিয়মিত প্রকাশ করা এবং আক্রান্ত নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পরিবার ও সমাজকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করানো অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও ওষুধে শুল্ক মওকুফের উদ্যোগ এবং হেলথ ইন্সুরেন্সের আওতায় ক্যান্সার চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আলোচনায় চট্টগ্রামে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপনের দাবিও জানান বক্তারা।
আলোচনায় বক্তারা গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে আরও বলেন, সচেতনতা সৃষ্টি, ভুল তথ্য দূর করা এবং জনগণকে স্বাস্থ্যসচেতন করে তোলা, সবক্ষেত্রেই সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।