সাতকানিয়ায় সরকারী ডিপটিওবয়েল ব্যক্তি মালিকানায় ঃ তৃষ্ণার্তের আহাজারি
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি মোঃখোরশেদ আলম
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সরকারীভাবে বরাদ্ধ দেওয়া ডিপটিওবয়েল এককভাবে দখলে নিয়ে স্থানীয়দের পানি নিতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে সামাজিক শালিস বৈঠকের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি বলেও অভিযোগ।
ঘটনাটি ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বোগার বাড়ি এলাকায়।
লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, বিগত ৬/৭ বছর আগে সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বোগার বাড়ি এলাকার মৃত জয়নুল আবেদিনের ছেলে মোঃ ইসমাইল ও মোঃ ফরিদের বসতভিটায় মাত্র ২ পরিবারের জন্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে একটি ডিপটিওবয়েল স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে মোঃ ফরিদ ও তার পরিবার মোঃ ইসমাইলকে ওই ডিপটিওবয়েল থেকে পানি নিতে নিষেধ করে। এবিষয়ে একাধিক বার সামাজিক শালিস বৈঠক হলেও কোন সুরাহা না হওয়ায় ভুক্তভোগি মোঃ ইসমাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানী বৈঠকে মোঃ ইসমাইলকে পানির লাইন দেওয়ার নির্দেশনা দেন। বৈঠকে মোঃ ফরিদ পানির লাইন দেওয়ার নির্দেশনা মেনে নেন।
এদিকে ইউএনও’র নির্দেশনায় স্থানীয় সাবেক মেম্বার মোঃ ইউনুস ও কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীর সহযোগিতায় মেস্ত্রী নিয়ে মোঃ ইসমাইল পানির লাইন নিতে গেলে অভিযুক্ত মোঃ ফরিদ ও তার পরিবার বাধা দেয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মোঃ ফরিদ ও ছেলে সাঈদ লাটিসোটা এবং ছুরি নিয়ে তেড়ে আসে। খবর পেয়ে ইউএনও’র নির্দেশে উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও লক্ষণ বাবু এবং এসআই উত্তমের নেতৃত্বে সাতকানিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারাও নানাভাবে চেষ্টা করে মোঃ ফরিদকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, আমার চাকুরী জীবনে এধরণের ঘটনা দেখিনি। ফরিদকে এত করে বুঝিয়েও পানি দিতে রাজি করাতে পারিনি।
সাতকানিয়া থানার এসআই উত্তম বলেন, মানবিক বিবেচনায় ইসমাইলকে পানির লাইন দেওয়া এবং ঝগড়াঝাটি বন্ধের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিনে জানা যায়, অভিযুক্ত মোঃ ফরিদ সাবেক এক সচিবের বসতভিটা ও ক্ষেতখামার দেখাশোনা করেন। মূলত তার ইন্দনেই মোঃ ফরিদ ইউএনওসহ কাউকে পাত্তা দিচ্ছেনা। সেই সচিবের হয়ে স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি ও কৃষকলীগ নেতা এবং কয়েকজন মিলে ইউএনওসহ সবাইকে বিভ্রান্ত করছে।
সরেজমিনে আরও জানা যায়, ওই সচিবের গ্রামের বাড়িতেও একটি সরকারি ডিপটিউবল স্থাপন করা হয়েছে। সেই ডিপটিউবয়েল থেকেও প্রতিবেশি কাউকে পানি দেওয়া হয় না। তারা অনেক দুর থেকে পানি সংগ্রহ করে বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
অভিযুক্ত মোঃ ফরিদ বলেন, আপনারা যত কিছুই করেন আমি ইসমাইলকে পানির লাইন দেব না। আপনাদের যা ইচ্ছে করতে পারেন।
- সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, মোঃ ইসমাইলকে পানির লাইন দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত মোঃ ফরিদকে একাধিক বার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি তা অগ্রাহ্য করেছেন। এব্যাপারে বিধিমতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোঃ খোরশেদ আলম সাতকানিয়া চট্টগ্রাম প্রতিনিধি