Search
Close this search box.

হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকেও বেতন নিচ্ছেন নার্স

কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রাজিব চন্দ্র সূত্রধরের বিরুদ্ধে মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।

সিনিয়র ওই স্টাফ নার্স আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই হাসপাতাল থেকে নিজেকে আত্মগোপন রাখলেও ডিউটি না করে নিয়মিত বেতন উত্তোলনসহ হাসপাতাল থেকে রোগী বের করে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আর এ অনিয়মটি করতে সহায়তা করেছেন হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক আঁখি রানী বণিক ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পরিচালক ডা. হেলিস রঞ্জন সরকার। হেলিস রঞ্জন সরকার ওই নার্সের সম্পর্কে দুলাভাই।

সরেজমিনে হাসপাতালে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট হাজিরা রেজিস্ট্রার খাতার বেশ কিছু পাতায় রাজিরের নামের পাশে বিগত কয়েক মাসের একাধিক তারিখে অনুপস্থিত লেখা রয়েছে। হাসপাতালের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, হাজিরা খাতায় রাজিবের নামের পাশে কয়েক মাসের অনুপস্থিত লেখা আছে কিন্তু সে ঠিকই বেতন উত্তোলন করেছে। এটা প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি ছাড়া কিছুই নয়। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে হাসপাতালটিতে পরিচালক ও সেবা তত্ত্বাবধায়ক সিন্ডিকেট করে অনিয়ম আর হয়রানিমূলক ডিউটি দিচ্ছে। যা অনৈতিকতার চর্চা ও এক ধরনের নির্যাতন।

এ ছাড়া প্রতিবেদকের কাছে থাকা হাজিরা রেজিস্ট্রার কপির ২৪ সনের নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাস ও ২৫ সনের মার্চ মাসের পাতায় অনুপস্থিত স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রারে ২০২৪ সনের নভেম্বর মাসের পাতায় হাসপাতালের এনএসজি রোজিনা স্বাক্ষরিত একটি সংক্ষিপ্তপত্র সংযুক্ত রয়েছে যাতে লিখা রয়েছে, ‘প্রতি রাজিব চন্দ্র সূত্রধর, অনুমতি ছাড়া ১৪ তারিখ হতে ২৮ তারিখ পর্যন্ত হাজিরা খাতায় সিগনেচার করবেন না’ মর্মে একটি টোকেনে সতর্ক সংযুক্তি রয়েছে। যা প্রতীয়মান হয় যে, রাজিব চন্দ্র সূত্রধর উপরোক্ত দিনগুলোতে বৈধভাবে কিংবা ছুটি নিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন না। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে এভাবেই চলছিল তার অনুপস্থিতি উপস্থিতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিনিয়র নার্সদের বলেন, এভাবে বেতন উত্তোলন করা একা ও প্রশাসনিক সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়াও রাজিব চন্দ্র সূত্রধরের বিরুদ্ধে রয়েছে হাসিনা সরকারের দলীয় প্রভাব কাটিয়ে অনৈতিক বলপ্রয়োগ ও ভিন্ন মতামতের চাকরিজীবীদের হয়রানির অভিযোগ।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজিব চন্দ্র সূত্রধর ডিউটিতে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ষড়যন্ত্রের অংশ। অফিসের তারাই এসব ফটোকপি বাহিরে দিয়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আমাকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সেবা তত্ত্বাবধায়ক ও এনএসজি রোজিনা এ দুজনের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে। আমি পাওনা ছুটির দাবি করছি। সব বিষয়ে আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সঠিক তদন্ত দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক আঁখি রানী বণিক বলেন, সব বলা যাবে না, সে পরিচালক স্যারের আত্মীয়। আপনাদের আরও কিছু জানার থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলুন।

এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাজিব চন্দ্র সূত্রধর আমার কোনো আত্মীয় নয়। সে ডিউটি করেই বেতন উত্তোলন করেছে।