১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সাবেক মন্ত্রী জাবেদসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নামে ভুয়া কোম্পানি খুলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং সেই টাকা আবার নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাইনউদ্দীন বাদি হয়ে মামলাটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ।

মামলায় আসামি করা হয়েছে লন্ডনে পলাতক সাইফুজ্জামান জাবেদ, তার স্ত্রী ও ইউসিবিএলের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, ভাই আনিসুজ্জামান ও আসিফুজ্জামান, বোন রোকসানা জামান ও আফরোজা জামানসহ ইউসিবিএলের সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। এছাড়াও আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা মিছবাহুল আলম, আব্দুল আজিজ ও শাহরিয়ার হোসেনও আছেন তালিকায়।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আরামিট গ্রুপের কর্মচারীদের নামে খুলে দেওয়া মডেল ট্রেডিং, ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং ও রিলায়েবল ট্রেডিং নামের তিনটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২০ সালের নভেম্বরে ইউসিবিএলের বন্দর শাখা থেকে ১৫ কোটি টাকার ‘টাইম লোন’ নেয়া হয়। ব্যাংক অনুমোদনের জন্য ভুয়া পরিদর্শন প্রতিবেদন ও তথ্য দেওয়া হয়, যদিও ব্যাংকের নিজস্ব ক্রেডিট কমিটি এতে ৯টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল।

ঋণ অনুমোদনের পরপরই টাকা কয়েকটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঘুরিয়ে মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যেখান থেকে সাইফুজ্জামান জাবেদ ও রুকমীলা জামানের মালিকানাধীন আরামিট সিমেন্ট ও আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের আগের ঋণ পরিশোধ করা হয়।

দুদক বলছে, পুরো পরিকল্পনা ছিল আত্মসাৎ ও পাচারের উদ্দেশ্যে। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে নেয়া টাকা ফের নিজেদের অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করে ঋণ শোধের নামে আত্মসাৎ করা হয়, যা দুর্নীতি দমন আইনের পাশাপাশি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের গুরুতর অপরাধ।

এর আগে গত ২৪ জুলাই একইভাবে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী জাবেদ ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে দুদক।

সাইফুজ্জামান জাবেদ ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী ও পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ গঠনের অভিযোগ ওঠে। সরকারের পতনের আগে ৫ আগস্ট তিনি স্ত্রী-পরিবারসহ লন্ডনে পাড়ি জমান বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।