গাজার ওপর ইসরাইলের অবরোধ অব্যাহত রয়েছে, এবং ২০২৪ সালে একাধিকবার ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী গাজার ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা। এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যাকসেস নাউ।
২০২৪ সালে গাজার ইন্টারনেট ছয়বার বন্ধ করার পর, এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হলেও, ইসরাইলের বিরুদ্ধে তা কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরাইলের দখলদার বাহিনী একাধিকবার গাজার ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়েছে। এটি গাজার সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা একদিকে যুদ্ধের কবলে পড়ছে, অন্যদিকে তাদের যোগাযোগের সুযোগও সীমিত হয়ে যাচ্ছে।
অ্যাকসেস নাউ-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনাগুলো বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে রয়েছে গণ-বাস্তুচ্যুতি, হাসপাতাল এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা, মানবিক সহায়তা বন্ধ করা এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমাবর্ষণ চালানো। এসব কার্যক্রমের মধ্যে গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধ এখনও চলছে। এই সংঘর্ষে ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, এবং অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, এর মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং ইসরাইলি সেনা গাজা থেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে গাজার মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সংকটের সমাধান এখনও অনেক দূরে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং এ অঞ্চলের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন যে, গাজার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তার মাধ্যমে জীবনযাত্রার মৌলিক সুযোগগুলোও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।