Search
Close this search box.

বিএনপির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি: ফরহাদ মজহার

বিএনপির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।

শনিবার (১৫ মার্চ) যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির ‘দ্রুত নির্বাচন’ দাবির সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, দলটির অনেক নেতা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। তারা নিশ্চিতভাবে বঙ্গোপসাগরে ডুববে। তবে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থান অভ্যুত্থানকারীদের শক্তি জুগিয়েছে। তাই বিজয়ের পরপরই তাকে মুক্ত করা হয়েছে।

ফরহাদ মজহার বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে ‘নির্বাচিত সরকার’ হিসেবে গণ্য করা উচিত। তার মতে, শুধু ভোটের মাধ্যমেই সরকার নির্বাচিত হয় এই ধারণা ভুল। গণঅভ্যুত্থানই প্রকৃত গণতন্ত্রের প্রতিফলন এবং জনগণের অভিপ্রায়ই এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চব্বিশ সালে ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল, কিন্তু ‘ফ্যাসিবাদী সংবিধান’ বহাল থাকায় প্রতিবিপ্লবও সংঘটিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সংবিধান না থাকলেও ফরমান দিয়ে দেশ চালানো সম্ভব। তবে অভ্যুত্থানকারীরা একের পর এক ভুল করে চলেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল চুপ্পুর (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) কাছে শপথ নেওয়া। এখন তারা মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছেন, যা আরও একটি ভুল।

মধ্যপন্থাকে ‘সুবিধাবাদ’ আখ্যা দিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, তরুণদের দল হতে হবে সব ধরনের ফ্যাসিবাদবিরোধী। কেবল বাঙালি জাতিবাদের বিরোধিতা করলেই চলবে না, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদসহ সব রূপের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।

ভারত ক্রমাগত উসকানি দিচ্ছে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি আসছে। নিজেদের মধ্যে সংঘাত ও ক্ষমতার লড়াই বন্ধ না করলে পরাজিত ফ্যাসিবাদীরা দিল্লির সহায়তায় ফিরে আসতে পারে। এরইমধ্যে মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তারা ইউনূস সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

বিদ্যমান সংবিধান ‘বাংলাদেশের নয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সত্তরের নির্বাচন হয়েছিল পাকিস্তানের নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য। স্বাধীনতার পর যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তার জন্য জনগণের ম্যান্ডেট ছিল না। এটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বিপরীত।

সভায় আরও বক্তব্য দেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট বেনজীন খান, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মদ রোমেল প্রমুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান সভা পরিচালনা করেন।