গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা, ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনী। গত একদিনে বিমান হামলায় অন্তত ১১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর ত্রাণকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষমাণ অবস্থায়।

শনিবার (১২ জুলাই) দক্ষিণ রাফাহ শহরের আল-শাকুশ এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ধরনের সহায়তা কেন্দ্রে হামলাকে ‘মানব হত্যাযন্ত্র’ ও ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত মে মাসের শেষ দিক থেকে জিএইচএফ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত এসব স্থানে ৮০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি।

আল-আকসা হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দেগরান বলেন, নিহতদের অধিকাংশের মাথা ও পায়ে গুলি লেগেছে। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মারাত্মক সংকটে আমরা দিশেহারা।

এদিন গাজার অন্যান্য এলাকায়ও ইসরায়েলি হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হন। শহরের তুফাহ এলাকায় জাফফা স্ট্রিটে এক বাসায় বোমা হামলায় মারা গেছেন অন্তত চারজন। আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। জাবালিয়ায় দুটি আবাসিক ভবনে হামলায় মারা যান ১৫ জন। শাতি শরণার্থী শিবিরে নিহত হয়েছেন আরও সাতজন। উত্তর গাজার বেইত হানুন এলাকায় একযোগে প্রায় ৫০টি বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজায় ২৫০ বার হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে তারা খাদ্য ও মানবিক সহায়তাও ঢুকতে দিচ্ছে না, যদিও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

 

 

গাজায় সরকারি মিডিয়া অফিস শনিবার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অপুষ্টিতে ৬৭ শিশু মারা গেছে। আরও ৬ লাখ ৫০ হাজার শিশুর ওপর তাৎক্ষণিকভাবে চরম অপুষ্টির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

মিডিয়া অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়, গত তিন দিনে খাদ্য ও ওষুধের অভাবে বহু মৃত্যু হয়েছে। এটি এক চরম নিষ্ঠুর মানবিক বিপর্যয়।

অন্যদিকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার আলোচনায় অগ্রগতি থেমে গেছে। আলোচনায় মূল বাধা— ইসরায়েলি সেনারা কতটা অংশ থেকে সরে যাবে, সেই মানচিত্র নিয়ে। হামাস বলছে, ইসরায়েলের প্রস্তাব অনুসারে রাফাহসহ প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের দখলে থেকে যাবে, যা তারা মেনে নেবে না।

 

 

হামাসের এক প্রতিনিধি বলেছেন, “এই মানচিত্রে সম্মতি দিলে গাজার অর্ধেক পুনরায় দখলকৃত এলাকা হিসেবে বৈধতা পাবে, আর পুরো ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন বন্দিশিবিরে পরিণত হবে।