মোহাম্মদ ইউছুপ, চট্রগ্রাম:
চট্টগ্রাম, ২৩ মে ২০২৫ (শুক্রবার):
উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলিয়ে কামেল, মুর্শিদে বোরহক, হাদিয়ে জামান শাহ সুফিয়া আল্লামা নুরুল হুদা কাদেরী (রহ.)-এর ৪৬তম ইসালে সাওয়াব উপলক্ষে চট্টগ্রামের খুলশীস্থ দারুল হুদা দরবারে গাউছিয়া শরীফ মাদ্রাসা সংলগ্ন নুরিয়া কমপ্লেক্স ময়দানে আজিমুশশান মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব ডাঃ শাহাদাত হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন:
“ইসলাম শান্তি, পবিত্রতা ও শৃঙ্খলার ধর্ম। এই সমাজকে পরিশুদ্ধ ও নৈতিকতাভিত্তিক করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে আত্মশুদ্ধির চর্চা ও সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। পরিচ্ছন্ন নগরী কেবল ভৌত অবকাঠামো দিয়ে গড়ে ওঠে না, বরং নাগরিকদের চারিত্রিক নির্মলতা ও দায়িত্বশীলতাই প্রকৃত উন্নয়নের মূলভিত্তি।
আমরা একটি পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন ও আলোকিত চট্টগ্রাম চাই—যেখানে ইসলামী মূল্যবোধ, ভ্রাতৃত্ব, মানবতা ও নৈতিকতা থাকবে উন্নয়নের চালিকাশক্তি। এ ধরনের মাহফিল মানুষের হৃদয়ে তাকওয়া ও আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে; যা সমাজের প্রকৃত কল্যাণে অনন্য ভূমিকা পালন করে।“
প্রধান মেহমান হিসেবে মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা হাসান রেজা আল কাদেরী সাহেব। তিনি তাঁর আলোচনায় বলেন,
“আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বগণের ইসালে সাওয়াব মাহফিল হচ্ছে একেকটি ইমান, আমল ও আখলাক চর্চার প্রশিক্ষণ শিবির। শাহ সুফিয়া আল্লামা নুরুল হুদা কাদেরী (রহ.) ছিলেন এমন একজন অলি, যাঁর জীবন, আদর্শ ও ত্যাগ আমাদের চলার পথে আলো দেখায়।“
বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হযরত মাওলানা মাহদী আকিব শাহ (দা.বা.), যিনি বলেন,
“আল্লাহর ওলিরা যুগে যুগে সমাজ সংস্কার ও নৈতিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁদের স্মরণে আয়োজিত এই মাহফিল আত্মিক পরিশুদ্ধির অন্যতম মাধ্যম।“
মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আতাউল্লাহ নাইমি, যিনি কোরআন–সুন্নাহভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দারুল হুদা ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট বাংলাদেশ–এর সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতার সুযোগ্য উত্তরসূরি সাহেবজাদা শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকি সাহেব।
সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সঞ্চালনা করেন দরবারে গাউছিয়া শরীফের খাদেম মাওলানা সাইফুল্লাহ।
মাহফিলে দেশ বরন্যে আশেকানে গাউছিয়া, ওলামা–মাশায়েখ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক ও সাধারণ মুসল্লিগণ অংশগ্রহণ করেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভিড়ে মাহফিল প্রাঙ্গণ পরিণত হয় এক আত্মিক আবহে উদ্ভাসিত মিলনমেলায়।
এছাড়াও মাহফিল শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।