
প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে সমুদ্রের নোনা জলে পা ভেজাতে বা আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের চূড়ায় উঠে মেঘের মাঝে হারিয়ে যেতে কার না ইচ্ছা হয়! বিশ্বের বৃহত্তম সৈকতের শহর কক্সবাজার বা পাহাড়ের শহর বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি গেলে ভ্রমণপিপাসু মানুষের এই ইচ্ছাপূরণ হয় সহজেই।
ফলে পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থানেই থাকে কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের নাম। বিপুল পর্যটকের কথা মাথায় রেখে বৃহত্তর চট্টগ্রামের এসব পর্যটন এলাকায় বিপুল বিনিয়োগও করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে নিরাপত্তা ঘাটতি, দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে পর্যটক কমে যাওয়ায় এ বছরও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজারে বালিয়াড়ি দখল, বর্জ্য সংকট ও প্রতারণার ঘটনা যেমন পর্যটকদের আস্থা কমাচ্ছে, তেমনি পাহাড়ি জেলায় দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থা ও অনিশ্চিত নিরাপত্তা পরিবেশে ভ্রমণ আগ্রহ হ্রাস পাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হোটেল মালিক, গাইড, দোকানদার ও পরিবহন খাতের সঙ্গে যুক্ত হাজারো মানুষ।
পার্বত্য এলাকার সৌন্দর্য দেখতে কেবল দেশ নয়- বিদেশ থেকেও পর্যটক আসেন। তবে গেল বছরে বিদেশি পর্যটকদের আগমন আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। আয়ও কমছে দিন দিন। ২০২২ সালে যেখানে ১৮৪১ জন বিদেশি পর্যটক বান্দরবানে এসেছিলেন সেখানে চলতি বছরের ৯ মাসে এসেছেন মাত্র ১১৫ জন।
পর্যটক কমে গেছে রাঙমাটি ও খাগড়াছড়িতেও। ঝুলন্ত ব্রিজ, কাপ্তাই হ্রদ, আলু টিলা, পাহাড়ের কোলে নদীর তীরে পড হাউস, সাজেকসহ আকর্ষণীয় একাধিক পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও সেখানে পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। পাহাড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে এর বড় কারণ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
এমন পরিস্থিতিতে আজ দেশে উদযাপন হতে যাচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটনের বিকাশে নানা উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত এসব উদ্যোগ কতটা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মুখে হাসি ফুটাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।