বরিশালের বাবুগঞ্জে সাবেক দুই সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের তিন চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের ১১ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কেন্দ্র দখল, ভাঙচুর, মারধর ও ভোট ডাকাতির অভিযোগে গত ২১ নভেম্বর বাবুগঞ্জ থানায় দায়ের করা এ মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে।বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন হেমায়েত বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে বাবুগঞ্জ থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান, বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী এমদাদুল হক দুলাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব, উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ধবপাশা ইউনিয়ন তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. সোহেল সরদারসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
মামলা বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের ‘ঠাকুর মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে’ ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট ছিলেন আনোয়ার হোসেন হেমায়েত। ভোট চলাকালে সকাল ১০টার দিকে আসামিরা রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে হামলা চালায় এবং বিএনপি দলীয় প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে। পরে ভোট কেন্দ্রে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এছাড়া মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে ভোটকেন্দ্র দখল করে। পরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর ব্যালট পেপারে সিল মেরে তাকে অবৈধভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেন।
মামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাঁতী দলের নেতা সোহেল সরদার বলেন, “বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সুলতান আহমেদ খান ‘আওয়ামী লীগ ঘরানার’ লোকজনদের নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিটি গঠন করছে।
“এর প্রতিবাদে মাধবপাশা ইউনিয়নে একটি ঝাড়ু মিছিল বের করা হলে বের করা হলে আমি নেতৃত্ব দেই। তাই আমাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।”
সোহেলের অভিযোগ, “সুলতানের ছেলে শরফুদ্দিন আহমেদ খান খুলনা প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিল। ওই পরিচয়ে সে সরকারি চাকরিও পেয়েছে। ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙের কারণে’ ২০০৬ সালে সুলতানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল।”