জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই: ফাওজুল কবির

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ওপর নজর রাখা হচ্ছে জানিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

মঙ্গলবার ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে লাফার্জহোলসিম এবং জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানির মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি সই করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী জালালাবাদ লাফার্জহোলসিমকে আগামী দশ বছরে দৈনিক ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করবে, যা আগামী বছরের ১৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। বিইআরসি ঘোষিত নতুন দর ৪০ টাকা (শিল্প) এবং ৪২ টাকা (ক্যাপটিভ) ঘনমিটার হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। লাফার্জের সঙ্গে ২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারি ২০ বছর মেয়াদি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, যুদ্ধের মধ্যে একটি তেলের জাহাজ বন্দরে এসেছে, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত মজুদ হাতে রয়েছে। আমাদের সুবিধা হচ্ছে সরবরাহকারীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে তেল আনেন। মূল উৎস মধ্যপ্রাচ্য হলেও অনেক সরবরাহকারী সিঙ্গাপুর থেকে, মালয়েশিয়ার মার্কেট থেকে তেল আনেন। সে কারণে তেলের সরবরাহ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। তবুও আমরা যুদ্ধের ওপর নজর রাখছি।

ভর্তুকিও বাড়াবে না আবার দাম বাড়াবে না বলা হচ্ছে। তাহলে ঘাটতি সমন্বয় হবে কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কিছু কৌশল রয়েছে। বিপিসির কাছে কিছু অর্থ রয়েছে, প্রয়োজন হলে সেখান থেকে সমন্বয় করা হবে। তিনি আরও বলেন, গ্যাস খাতে অনেক ভর্তুকি রয়েছে। আমরা আর ভর্তুকি বাড়াতে পারবো না। লাফার্জহোলসিমের সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, এখানে একটি সুবিধা রয়েছে, অন্য সব কোম্পানি ঢাকায়, যেখানে গ্যাসের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। আর লাফার্জের অবস্থান হচ্ছে সিলেট অঞ্চলে।যেখানে গ্যাসের অভাব নেই।
নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, আমরা নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি পুরাতন বিনিয়োগকে ধরে রাখতে কাজ করছি। এই চুক্তির মাধ্যমে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়া। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবে। তাদের ফিডব্যাক থেকে অনেকেই আগ্রহী হবেন বলে মনে করি।

জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো সিজফ্রিয়েড রেঙ্গলি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ সিইও ইকবাল চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রেজানুর রহমান, জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

হোলসিম সুইজারল্যান্ড ও লাফার্জ প্যারিসভিত্তিক কোম্পানি। লাফার্জের বিশ্বের ৬৪টি দেশে, ৭০টি দেশেহোলসিমের কার্যক্রম ছিল। কোম্পানি দু’টি ২০১৪ সালে একীভূত হয় লাফার্জহোলসিম নাম ধারণ করে। বাংলাদেশে সিলেটের ছাতকে লাফার্জহোলসিমের সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে দুটি ও খুলনার মোংলায় একটি গ্রাইন্ডিং স্টেশন রয়েছে।