
নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মাণাধীন শহীদ ওয়াসিম আকরাম এক্সপ্রেসওয়ের নিচের সড়কে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ পেতে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পাঁচ ঠিকাদার। এরমধ্যে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন অংশ ভাগ করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান সৌন্দর্যবর্ধন কাজের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আবেদন করেছে। তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রকল্পটি বুঝিয়ে না পাওয়া পর্যন্ত সেখানে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ইতোমধ্যে এক্সপ্রেসওয়ের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশে বাগান ও সচেতনামূলক বার্তা প্রচারের জন্য একটি বেসরকারি ব্যাংকের সাথে চুক্তি করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
চসিক সূত্র জানায়, নগরীর লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ পেতে আবেদন করেছে মো. আবুল কালামের প্রতিষ্ঠান মেসার্স চ্যাম্পিয়ন এন্টারপ্রাইজ, দেওয়ানহাট থেকে চৌমুহনী মোড় পর্যন্ত কাজের জন্য আবেদন করেছে নিহার সুলতানার প্রতিষ্ঠান জেএম পাবলিসিটি। নিহার সুলতানা চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক এক সভাপতির স্ত্রী। চৌমুহনী মোড়ে মসজিদের সামনে থেকে বাদামতলী মোড় পর্যন্ত এবং বারিক বিল্ডিং থেকে নিমতলা মোড়ের আগ পর্যন্ত কাজ পেতে আবেদন করেছে মো. ফজলুল করিমের প্রতিষ্ঠান এফকে ক্লাসিকেল এডভার্টাইজিং। আগ্রাবাদ সোনালী ব্যাংক থেকে আগ্রাবাদ টিএন্ডটি ভবনের আগ পর্যন্ত এবং নিমতলা বিশ্বরোড হতে কাস্টম মোড় পর্যন্ত কাজের জন্য আবেদন করেছে মো. হাসানের প্রতিষ্ঠান এস এন এডভার্টাইজিং। আগ্রাবাদ টিএন্ডটি ভবন থেকে বারিক বিল্ডিং মোড়, ইপিজেড সিমেন্স হোস্টেল থেকে সিমেন্ট ক্রসিং মোড় পর্যন্ত কাজ পেতে আবেদন করেছে শারমিন আক্তারের প্রতিষ্ঠান রেড এন্ড ব্ল্যাক। শারমিন আক্তার আব্দুল মালেকের স্ত্রী।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নিচের সড়কের বিষয়ে আমরা একটি বেসরকারি ব্যাংকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। তারা সেখানে বাগান করবে এবং সিডিএ সংক্রান্ত কিছু জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করবে। সেখানে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত লেখা প্রচার করা হবে। কোন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে না।
একই স্থানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, সিটি কর্পোরেশনের এ বিষয়ে সিডিএ অবগত না। আমি প্রয়োজনে মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলবো। মেয়র সাহেবের সাথে আমরা বিভিন্ন ইস্যু সমন্বয় করে কাজ করছি। প্রয়োজনে এটি নিয়েও আলাপ করবো। আসলে একটি জায়গা তো একত্রে দুই প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ বা চুক্তি করতে পারে না।
এক্সপ্রেসওয়ের উপরের অংশ বিজ্ঞাপনের জন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সিডিএ চেয়ারম্যান নুরুল করিম বলেন, প্রথমত এক্সপ্রেসওয়ে এখনো নির্মাণাধীন একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পে আমাদের ৫০০ কোটি টাকার বেশি লোন রয়েছে। এছাড়াও, এটার রক্ষণাবেক্ষণে আমাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এরমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি এক্সপ্রেসওয়ের উপরে বাণিজ্যিকভাবে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য আমাদের কাছে বরাদ্দ চেয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এক্সপ্রেসওয়ের উপরে আমরা বিজ্ঞাপন বসাবো না।
জানতে চাইলে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সিডিএ আমাদের যেসব ফ্লাইওভার বুঝিয়ে দিয়েছে আমরা সেখানে আয়বর্ধক কিছু কাজ করছি। তবে সিডিএ যেহেতু আমাদের এখনো শহীদ ওয়াসিম আকরাম এক্সপ্রেসওয়ে বুঝিয়ে দেয়নি সেখানে আমরা আপাতত কোন কাজ করবো না। সিডিএ থেকে বুঝিয়ে দিলে তখন সিদ্ধান্ত নিব।