চকরিয়ায় আ. লীগের ঝটিকা মিছিল, সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার ৫৫

কারান্তরীণ সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে আদালতে তোলার প্রাক্কালে কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের পর জেলাজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান করেছে পুলিশ।

অপারেশন ডেভিল হান্ট’র আওতায় চালানো এই অভিযানে বুধবার বিকেল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ নেতাসহ ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী এ তথ্য জানান।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, আটককৃতরা হলেন- রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম মন্ডল, রাজারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, চাকমারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ফতেখারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেম্বার আবু তাহের টুনু, উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসাইন মিথুন, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম মনজুর, সিনিয়র সদস্য ও সাবেক মেম্বার সিরাজুল বশর, দানু মিয়া চৌধুরী, জালিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল মনজুর, আওয়ামী লীগ নেতা রিদুয়ান ইসলাম, চকরিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ, পেকুয়ায় সাবেক এমপি জাফর আলমের ভাগিনা হাসান আল বশির, আওয়ামী লীগ নেতা নুর মোহাম্মদ মাদু মেম্বার, মগনামা নুন্যার পাড়ার মোস্তাক মিয়া, মহেশখালীর যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, এমপি আশেকের ঘনিষ্ট সহচর সাদ্দাম, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ মেম্বার, সিরাজ মেম্বার, কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন এবং লেমশীখালী ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক নুরুল আমিন।

এছাড়া, কক্সবাজার সদর উপজেলায় পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরানসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা রয়েছে।

জানা যায়, বুধবার সকাল ৮টার দিকে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে। বিচারক আনোয়ারুল কবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আদালত সূত্র জানায়, জাফর আলম চকরিয়া থানার পাঁচটি ও পেকুয়া থানার দুটি মামলার আসামি। এর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি মামলায় ১৪ দিন ও পেকুয়া থানার ২টি মামলায় ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। জাফর আলমকে বুধবার সকালে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। ৭টি মামলায় শুনানি শেষে তাকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে চকরিয়া থানার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

জাফর আলমকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে ঝঁটিকা মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় তারা ঝটিকা মিছিল করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের কর্মী এনামুল হক। এই মিছিলের পর জেলাজুড়ে আইন-শৃঙ্খলার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠে। যার প্রেক্ষিতে জোরদার হয় অপারেশন ডেলিভ হান্ট।

এর আগে গত ০৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত এলাকায় যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারের নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল নিয়ে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে পুলিশ। ওই ঝটিকা মিছিলের পর পুলিশ একদিনে ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।