চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ৫ কোটির দুর্নীতির মামলায় ফারুক চৌধুরী

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২–এর উপসহকারী পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার নম্বর: ১(৮)২৫।

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, ফারুক চৌধুরী সরকারি দায়িত্বে থাকাকালীন অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদক জানিয়েছে, অনুসন্ধানে দেখা যায় ফারুক চৌধুরীর নামে ২ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৬০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে—যার মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫ কোটি ৭৪ লাখ ৯৭ হাজার ৭৫৩ টাকা। অথচ তার আয়কর নথিতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় দেখানো হয়েছে মাত্র ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ টাকা। ফলে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৩ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক চৌধুরী বলেন, “আমি একাধিকবার দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং চ্যালেঞ্জ করেছি—আমি এক টাকারও অনিয়ম করিনি। আমি দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকেই নিয়মিত করদাতা। আমার সকল বৈধ সম্পদের বিবরণ আয়কর নথিতে রয়েছে। এর বাইরে আমার কোনো সম্পদ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে আমি ৫ কোটির বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছি। অথচ আমার শুধু দুইটি ব্যাংকে ৭ কোটির বেশি ঋণ রয়েছে, যা সুদসহ বর্তমানে ১৪ কোটিরও বেশি। এই মামলা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী আরও দাবি করেন, “আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিই ২০১৭ সালের নভেম্বরে। অথচ মামলায় উল্লেখ রয়েছে ২০১৪ সাল থেকে আমি দায়িত্বে ছিলাম। এটা তথ্যগত ভুল। তার আগ পর্যন্ত আমি ব্যবসায়ী ছিলাম—সেই সময় আমি কীভাবে পাবলিক সার্ভেন্ট হতে পারি?”

প্রসঙ্গত, ফারুক চৌধুরী (৬০) চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।