আসাদের পতনে ইসরায়েল যেভাবে লাভবান

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ওই অঞ্চলে জোর সামরিক তৎপরতা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইতিমধ্যে গোলান বাফার জোন ‘সাময়িকভাবে’ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পাশাপাশি সিরিয়াজুড়ে বিমান হামলাও চালিয়েছে তারা। সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি দল দামেস্কের ২৫ কিলোমিটার কাছাকাছি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তবে দামেস্ক অভিমুখে এগোনোর এই খবর নাকচ করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ঐতিহাসিক দিন’ বলে মন্তব্য করেন। অবশ্য তার বক্তব্যে সতর্কতার সুরও শোনা গেছে। তিনি বলেন, যারা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিতে বাস করতে চায়, সেই সিরীয়দের প্রতি শান্তির হাত বাড়িয়ে দেবে তার দেশ।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘সিরিয়ার নতুন শক্তির সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনই আমাদের ইচ্ছা।

কিন্তু এটি না হলে ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার স্বার্থে যা করার তাই করব।’ 

এদিকে আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতির জন্য কী বয়ে আনবে তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন জানাচ্ছেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও জো বাইডেন—দুজনই বাশার আল-আসাদের পতনের জন্য কৃতিত্ব দাবি করছেন। তারা ভূমিকা রেখেছেন ঠিকই, তবে তা যতটা না পরিকল্পনা অনুযায়ী, তার চেয়ে বেশি ঘটনাচক্রে হয়েছে।

তবে এর বিনিময়ে তাদের প্রাপ্তির খাতায় যোগ হতে পারে, ইরানের সামরিক যোগাযোগ ও সরবরাহব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলার মতো অর্জন।

সর্বশেষ পটপরিবর্তনের পর মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল কি আগের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে? বিদ্রোহীদের জয় ইসরায়েলের ‘হামলার ফল’?
বাশার আল আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শক্তির জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হতো ইরান ও হিজবুল্লাহকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা করলে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়, যা লেবাননেও ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে আসাদের সহযোগী হিজবুল্লাহর ওপর। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হন।

বছরব্যাপী লড়াইয়ের পর গত ২৭ নভেম্বর হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। সেদিনই বিস্ময়করভাবে হামলা করে দ্রুত আলেপ্পো দখল করে নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম বা এইচটিএসের নেতৃত্বে সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠী। এর ১২ দিনের মাথায় ক্ষমতা ও দেশ ছাড়তে হলো সিরিয়ার শাসককে।